বর্তমানে দেশের সকল জমির রেকর্ডের অনুলিপি সংগ্রহ করা যায় কোন সেবার মাধ্যমে?

0
2K

প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সরকারি সেবাগুলো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। বর্তমানে দেশের সকল জমির রেকর্ড বা খতিয়ানের অনুলিপি সংগ্রহ করা যায় ই-পর্চা নামক সেবার মাধ্যমে। ই-পর্চা সেবাটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ, যা ভূমি সংক্রান্ত কার্যক্রমকে সহজ, দ্রুত, এবং সচ্ছল করতে সহায়ক হয়েছে।

ই-পর্চা কী?

ই-পর্চা হলো একটি অনলাইন সেবা, যার মাধ্যমে নাগরিকরা সহজেই তাদের জমির রেকর্ড বা খতিয়ানের অনুলিপি সংগ্রহ করতে পারেন। এই সেবার মাধ্যমে জমির মালিকানা, দাগ নম্বর, খতিয়ান নম্বর এবং জমির অবস্থান সম্পর্কিত সঠিক তথ্য পাওয়া যায়।

আগে জমির রেকর্ড সংগ্রহ করতে ভূমি অফিসে বারবার যেতে হতো এবং অনেক সময় ভোগান্তির শিকার হতে হতো। কিন্তু ই-পর্চা সেবা চালুর মাধ্যমে এই কাজটি এখন অনলাইনেই সম্পন্ন করা যায়।

ই-পর্চার সুবিধা

ই-পর্চা সেবা চালুর মাধ্যমে জমির রেকর্ড সংগ্রহ প্রক্রিয়া সহজতর হয়েছে। এর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো:

  1. সময় সাশ্রয়: জমির রেকর্ড সংগ্রহ করতে এখন আর ভূমি অফিসে গিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হয় না। ঘরে বসেই অনলাইনে রেকর্ডের অনুলিপি পাওয়া যায়।
  2. খরচ কম: আগে জমির কাগজপত্র পেতে দালাল বা মধ্যস্থতাকারীর ওপর নির্ভর করতে হতো, যা বাড়তি খরচ তৈরি করত। ই-পর্চা সেবার মাধ্যমে এই বাড়তি খরচ কমানো সম্ভব হয়েছে।
  3. স্বচ্ছতা: ভূমি রেকর্ডের তথ্য অনলাইনে পাওয়ায় জালিয়াতি এবং ভুল তথ্য প্রদান বন্ধ হয়েছে। এটি ভূমি মালিকদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  4. সহজ অ্যাক্সেস: দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে এই সেবা পাওয়া যায়।
  5. দালালমুক্ত সেবা: ই-পর্চার মাধ্যমে নাগরিকদের জমির রেকর্ড সংগ্রহ করতে কোনো দালালের প্রয়োজন হয় না।

ই-পর্চা সেবা কীভাবে নেওয়া যায়?

ই-পর্চা সেবার জন্য ব্যবহারকারীকে নির্দিষ্ট কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হয়।

  1. প্রথমে ভূমি সেবা পোর্টাল-এ প্রবেশ করতে হবে।
  2. জমির খতিয়ান, দাগ নম্বর, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করতে হবে।
  3. নির্দিষ্ট ফি অনলাইনে জমা দেওয়ার পর জমির রেকর্ড বা অনুলিপি ডাউনলোড করা যায়।

ই-পর্চার মাধ্যমে জনগণের সুবিধা বৃদ্ধি

ই-পর্চা সেবা দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। এর মাধ্যমে জনগণ জমির মালিকানা সম্পর্কিত যে কোনো বিরোধের সহজ সমাধান পেতে পারে। জমির রেকর্ড অনলাইনে পাওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরাও তাদের সম্পত্তি সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেতে সক্ষম হয়েছেন।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

ই-পর্চা সেবার মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনার ডিজিটালাইজেশন একটি বড় পদক্ষেপ। তবে এর আরও উন্নয়ন সম্ভব। কিছু পরামর্শ:

  1. সেবার আরও আধুনিকীকরণ করে মোবাইল অ্যাপ চালু করা।
  2. দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য করা।
  3. ব্যবহারকারীদের জন্য হেল্পলাইন চালু করা।

উপসংহার

ই-পর্চা সেবা বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনার একটি অনন্য উদাহরণ। এটি জনগণের ভোগান্তি কমিয়ে জমির তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া সহজ করেছে। এই সেবার যথাযথ ব্যবহার দেশের ভূমি খাতে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারে। তাই, ই-পর্চা ব্যবহার করে জমির রেকর্ড সংগ্রহ করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

Like
1
Căutare
Sponsor
Categorii
Citeste mai mult
Writing
What is the Challenge for AI in Writing Programs for Intelligent Behavior?
Artificial intelligence (AI) has made impressive strides over the past few decades, yet one of...
By Books of the Month 2025-02-12 13:57:50 1 2K
Loc
Khalishkhali Village: A Vibrant Tapestry of Agriculture and Education
Nestled within the expansive 37.36 square kilometers of the union, Khalishkhali village stands as...
By Khalishkhali 2024-02-05 05:58:31 0 9K
Book Reviews & Literary Discussions
অপেক্ষা বই রিভিউ
অপেক্ষা: এক নিরেট অপেক্ষার গল্প অপেক্ষা। শব্দটা যতটা সাধারণ, ততটাই গভীর। অপেক্ষার ভেতর লুকিয়ে...
By Bookworm Bangladesh 2024-12-02 05:18:09 0 2K
Books
দ্রুত বই পড়ার কৌশল
 জ্ঞান অর্জনে দক্ষতার নতুন পথ বই পড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা, যা আমাদের জ্ঞান বাড়াতে,...
By Razib Paul 2024-11-29 13:44:17 0 2K
Entertainment & Pop Culture
Ascendance of a Bookworm Where to Read After Anime
If you've just finished watching the Ascendance of a Bookworm anime and you're itching to dive...
By Books of the Month 2025-02-11 08:21:07 2 2K
AT Reads https://atreads.com