বর্তমানে দেশের সকল জমির রেকর্ডের অনুলিপি সংগ্রহ করা যায় কোন সেবার মাধ্যমে?

0
283

প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সরকারি সেবাগুলো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। বর্তমানে দেশের সকল জমির রেকর্ড বা খতিয়ানের অনুলিপি সংগ্রহ করা যায় ই-পর্চা নামক সেবার মাধ্যমে। ই-পর্চা সেবাটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ, যা ভূমি সংক্রান্ত কার্যক্রমকে সহজ, দ্রুত, এবং সচ্ছল করতে সহায়ক হয়েছে।

ই-পর্চা কী?

ই-পর্চা হলো একটি অনলাইন সেবা, যার মাধ্যমে নাগরিকরা সহজেই তাদের জমির রেকর্ড বা খতিয়ানের অনুলিপি সংগ্রহ করতে পারেন। এই সেবার মাধ্যমে জমির মালিকানা, দাগ নম্বর, খতিয়ান নম্বর এবং জমির অবস্থান সম্পর্কিত সঠিক তথ্য পাওয়া যায়।

আগে জমির রেকর্ড সংগ্রহ করতে ভূমি অফিসে বারবার যেতে হতো এবং অনেক সময় ভোগান্তির শিকার হতে হতো। কিন্তু ই-পর্চা সেবা চালুর মাধ্যমে এই কাজটি এখন অনলাইনেই সম্পন্ন করা যায়।

ই-পর্চার সুবিধা

ই-পর্চা সেবা চালুর মাধ্যমে জমির রেকর্ড সংগ্রহ প্রক্রিয়া সহজতর হয়েছে। এর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো:

  1. সময় সাশ্রয়: জমির রেকর্ড সংগ্রহ করতে এখন আর ভূমি অফিসে গিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হয় না। ঘরে বসেই অনলাইনে রেকর্ডের অনুলিপি পাওয়া যায়।
  2. খরচ কম: আগে জমির কাগজপত্র পেতে দালাল বা মধ্যস্থতাকারীর ওপর নির্ভর করতে হতো, যা বাড়তি খরচ তৈরি করত। ই-পর্চা সেবার মাধ্যমে এই বাড়তি খরচ কমানো সম্ভব হয়েছে।
  3. স্বচ্ছতা: ভূমি রেকর্ডের তথ্য অনলাইনে পাওয়ায় জালিয়াতি এবং ভুল তথ্য প্রদান বন্ধ হয়েছে। এটি ভূমি মালিকদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  4. সহজ অ্যাক্সেস: দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে এই সেবা পাওয়া যায়।
  5. দালালমুক্ত সেবা: ই-পর্চার মাধ্যমে নাগরিকদের জমির রেকর্ড সংগ্রহ করতে কোনো দালালের প্রয়োজন হয় না।

ই-পর্চা সেবা কীভাবে নেওয়া যায়?

ই-পর্চা সেবার জন্য ব্যবহারকারীকে নির্দিষ্ট কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হয়।

  1. প্রথমে ভূমি সেবা পোর্টাল-এ প্রবেশ করতে হবে।
  2. জমির খতিয়ান, দাগ নম্বর, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করতে হবে।
  3. নির্দিষ্ট ফি অনলাইনে জমা দেওয়ার পর জমির রেকর্ড বা অনুলিপি ডাউনলোড করা যায়।

ই-পর্চার মাধ্যমে জনগণের সুবিধা বৃদ্ধি

ই-পর্চা সেবা দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। এর মাধ্যমে জনগণ জমির মালিকানা সম্পর্কিত যে কোনো বিরোধের সহজ সমাধান পেতে পারে। জমির রেকর্ড অনলাইনে পাওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরাও তাদের সম্পত্তি সম্পর্কে সঠিক তথ্য পেতে সক্ষম হয়েছেন।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

ই-পর্চা সেবার মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থাপনার ডিজিটালাইজেশন একটি বড় পদক্ষেপ। তবে এর আরও উন্নয়ন সম্ভব। কিছু পরামর্শ:

  1. সেবার আরও আধুনিকীকরণ করে মোবাইল অ্যাপ চালু করা।
  2. দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য করা।
  3. ব্যবহারকারীদের জন্য হেল্পলাইন চালু করা।

উপসংহার

ই-পর্চা সেবা বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনার একটি অনন্য উদাহরণ। এটি জনগণের ভোগান্তি কমিয়ে জমির তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া সহজ করেছে। এই সেবার যথাযথ ব্যবহার দেশের ভূমি খাতে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারে। তাই, ই-পর্চা ব্যবহার করে জমির রেকর্ড সংগ্রহ করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

Site içinde arama yapın
Sponsorluk
Kategoriler
Read More
Announcement
বাংলাদেশী লেখক কমিউনিটি
বাংলাদেশের সাহিত্যিক ঐতিহ্য সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময়। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে লেখালেখির ধরণ,...
By Bookworm Bangladesh 2024-12-03 09:02:54 0 280
Tutorial
ডিজিটাল কনটেন্ট কিভাবে কম্পিউটারে সংরক্ষিত হয়?
বর্তমান যুগে আমরা প্রায় সব ধরনের কনটেন্ট ডিজিটাল ফরম্যাটে ব্যবহার করি। বই, সিনেমা, গান, ফটো,...
By Book Club Bangladesh 2024-12-20 11:32:35 0 101
Entertainment & Pop Culture
মুক্তিযোদ্ধাকে জুতার মালা!!!!
মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুর সঙ্গে ঘটে যাওয়া লজ্জাজনক ঘটনা গতকাল পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবর...
By Razib Paul 2024-12-24 11:33:27 0 90
Reading List
Hidden Gems: Unearthing Lesser-Known Bangladeshi Authors
In the diverse and rich tapestry of Bangladeshi literature, a treasure trove of hidden gems...
By Bookworm Bangladesh 2023-12-20 08:52:36 0 6K
Literature
Fostering a Reading Culture in Bangladesh: A Call to Authors and Storytellers to Publish on ATReads
In the vibrant tapestry of Bangladesh's cultural landscape, literature has always held a...
By Book Club Bangladesh 2023-12-26 11:49:54 0 9K