পিএসসির ১১ জন কবি-সাহিত্যিক
বাংলা সাহিত্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময়। পিএসসি (বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন) নির্ধারিত ১১ জন বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিক বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। এই সাহিত্যিকগণ বাংলা ভাষার অগ্রযাত্রায় অসামান্য অবদান রেখেছেন এবং তাদের লেখনী জাতির পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করেছে।
১. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮-১৮৯৪)
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাংলা উপন্যাস সাহিত্যের পথিকৃৎ। তার লেখা 'আনন্দমঠ', 'দেবী চৌধুরাণী', 'কপালকুণ্ডলা' উপন্যাসগুলি বাংলা সাহিত্যের অমর সৃষ্টি। 'বন্দেমাতরম' গানটি জাতীয়তাবোধ জাগিয়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
২. ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০-১৮৯১)
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন সমাজ সংস্কারক ও শিক্ষাবিদ। তিনি বাংলা গদ্য ভাষার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। 'বর্ণপরিচয়' তার অন্যতম বিখ্যাত রচনা, যা বাংলা শিক্ষার ভিত্তি গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।
৩. মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪-১৮৭৩)
বাংলা সাহিত্যে মহাকাব্যের সূচনা করেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তার লেখা 'মেঘনাদবধ কাব্য' বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ। তিনি বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক।
৪. মীর মশাররফ হোসেন (১৮৪৭-১৯১২)
মীর মশাররফ হোসেন বাংলা গদ্য সাহিত্যে এক অনন্য নাম। তার বিখ্যাত উপন্যাস 'বিষাদ সিন্ধু' ইসলামী ইতিহাস ও কাহিনির উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে, যা আজও পাঠকদের মুগ্ধ করে।
৫. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১)
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক। 'গীতাঞ্জলি' কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। কবিতা, গান, গল্প, নাটকসহ সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় তার অনন্য অবদান রয়েছে।
৬. দীনবন্ধু মিত্র (১৮৩০-১৮৭৩)
দীনবন্ধু মিত্র বাংলা নাট্য সাহিত্যের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তার রচিত 'নীলদর্পণ' নাটক ব্রিটিশ আমলে নীল চাষীদের দুঃখ-দুর্দশার বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। এটি বাংলা নাটকের জগতে এক যুগান্তকারী সৃষ্টি।
৭. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬)
বাংলার বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার 'বিদ্রোহী' কবিতার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে এক নতুন জাগরণ সৃষ্টি করেন। তার গান, কবিতা ও প্রবন্ধে সাম্য, মানবতা ও দ্রোহের ধ্বনি প্রতিফলিত হয়েছে।
৮. জসীম উদ্দীন (১৯০৩-১৯৭৬)
জসীম উদ্দীন বাংলার পল্লী কবি হিসেবে পরিচিত। তার লেখা 'নকশী কাঁথার মাঠ' এবং 'সোজন বাদিয়ার ঘাট' বাংলা লোকজীবনের চিত্র অঙ্কিত করেছে। তার কবিতায় বাংলার গ্রামীণ জীবনের অপূর্ব বর্ণনা ফুটে উঠেছে।
৯. ফররুখ আহমদ (১৯১৮-১৯৭৪)
ফররুখ আহমদ ছিলেন ইসলামী ভাবধারার কবি। তার লেখা 'সাত সাগরের মাঝি' এবং 'লাশ' কবিতাগুলো বাংলার সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
১০. কায়কোবাদ (১৮৫৭-১৯৫১)
কায়কোবাদ ছিলেন রোমান্টিক ধারার কবি। তার লেখা 'মহাশ্মশান' মহাকাব্যটি বাংলা সাহিত্যে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। তার কাব্যচর্চায় ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সংমিশ্রণ দেখা যায়।
১১. বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন (১৮৮০-১৯৩২)
বেগম রোকেয়া ছিলেন বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত। তার লেখা 'সুলতানার স্বপ্ন' ও 'অবরোধবাসিনী' নারীদের স্বাধীনতা ও সামাজিক উন্নয়নের দিকে আলোকপাত করেছে। তিনি নারী শিক্ষা বিস্তারে অসামান্য অবদান রেখেছেন।
এই ১১ জন কবি-সাহিত্যিক বাংলা সাহিত্যের ভিত্তি স্থাপন করেছেন এবং তাদের রচনাবলী আজও পাঠকদের অনুপ্রাণিত করে। তাদের সাহিত্য কর্ম বাংলার সংস্কৃতি ও ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলা ভাষার প্রচার-প্রসার ও সাহিত্য বিকাশে তাদের অবদান চিরস্মরণীয়।
ATReads হলো বইপ্রেমীদের জন্য একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, যেখানে পাঠক ও লেখকরা বই নিয়ে আলোচনা করতে পারেন এবং নতুন সাহিত্যিক তথ্য জানতে পারেন।
- Book Reviews & Literary Discussions
- Writing
- Reading List
- Arts and Entertainment
- Personal Development
- Storytelling
- Startup
- Books
- Arts & Crafts
- Dance
- Drinks
- Entertainment & Pop Culture
- Health & Fitness
- Education & Learning
- Food & Cooking
- Juegos
- Gardening
- Self-Care & Mental Health
- Home Decor & DIY
- Literature
- Music
- Networking
- Other
- Party
- Philosophy and Religion
- Descuento
- Shopping
- Relationships & Dating
- Sports
- Theater
- lifestyles & hobbies/shutterbugs
- Lifelong Learning
- Tutorial
- Announcement
- Inspirational Stories & Motivation