সমালোচনা কারীদের জবাব

0
9K

সমালোচনা—এটি যেমন একজন মানুষকে ভেঙে দিতে পারে, তেমনি গড়েও তুলতে পারে। পার্থক্যটা শুধু এই যে, আপনি সেটাকে কীভাবে গ্রহণ করছেন। কিন্তু আজ আমি শুধু গ্রহণের কথা বলবো না, কিছু প্রশ্নও রেখে যেতে চাই—সমালোচনার নামে আপনি যে তীর ছুঁড়লেন, তার গন্তব্য আপনি নিজে জানেন তো?

আমার জীবন, আমার পথচলা, আমার সিদ্ধান্ত—সবই আমার অভিজ্ঞতার আলোকে গড়ে উঠেছে। হ্যাঁ, ভুল করেছি, হবেই তো! ভুল না করলে মানুষ শিখে কীভাবে? তবুও লক্ষ্য করি, অনেকেই ভুল খোঁজার মাঝে যে উৎসাহ দেখায়, সহানুভূতির জায়গাটায় তারা যেন অনুপস্থিত।

সমালোচকদের অভাব হয় না। আপনি যদি কিছু করতে যান, দশজনের কথা শুনতেই হবে—“এটা ঠিক হচ্ছে না”, “ওর দ্বারা হবে না”, “নিজেকে খুব কিছু ভাবছে!” কখনো কখনো মন খারাপ হয়, কিন্তু প্রশ্ন জাগে—তারা কি সত্যিই আমার পথচলার দায় নিচ্ছে? না, নেয় না। তবু কেন এত অধিকার নিয়ে কথা বলে?

ধরুন, একজন তরুণ ছেলেকে দেখি—সে গ্রামের একটা ছোট্ট দোকানে বসে অনলাইনে কিছু শিখছে। ভিডিও দেখে, কোড শেখে, ইংরেজি শেখে, ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে। পাড়ার মানুষ হাসে—“ওই মোবাইল নিয়ে বসে থাকলে কিছু হবে না”, “ভবিষ্যতের চাকরি কি ইউটিউব থেকে আসবে?” কিন্তু কয়েক বছর পর দেখা যায়, সেই ছেলেটিই ফ্রিল্যান্সিং করে পরিবারের হাল ধরেছে। তখন আবার সবাই বলে—“আমরা তো শুরু থেকেই জানতাম, ছেলেটা একদিন কিছু করবেই!”

এটাই সমাজের চরিত্র—যখন আপনি লড়ছেন, তখন ব্যঙ্গ চলে; যখন আপনি সফল হন, তখন সবাই পাশে দাঁড়ায়। অথচ মাঝের সময়টুকুতে কেউ হাতে ধরে না।

আমার কথা বলি—আমি জানি, আমার পথে বাধা আসবে। ভুল হবে, পিছিয়ে যাব। কিন্তু চেষ্টা থামাব না। যারা সমালোচনা করছেন, আমি শুধু বলবো—আপনারা পাশে না দাঁড়ালেও ক্ষতি নেই, অন্তত টেনে নামানোর চেষ্টা করবেন না।

যদি সত্যিই ভালো চান, তবে গঠনমূলক পরামর্শ দিন। আর যদি শুধু কষ্ট দেওয়ার উদ্দেশ্যে কিছু বলেন, তাহলে জেনে রাখুন—আপনার সেই শব্দগুলো আমাকে থামাতে পারবে না। বরং আমাকে আরও সচেতন করে তুলবে, আরও শক্তি দেবে।

কারণ আমি জানি—আমি যা করছি, তা সময়ের সঙ্গে ফল দেবে। আর সেই সময়ই আপনাদের প্রশ্নের উত্তর হবে।

সমালোচনা যদি গঠনমূলক হয়, আমি কৃতজ্ঞ। কিন্তু যদি তা হয় ছোট করার জন্য, তুচ্ছতাচ্ছিল্য দেখানোর জন্য, তাহলে বলবো—“আপনার শব্দে আমি থামবো না। আমি জানি আমি কোথায় যাচ্ছি। আপনার চোখে হয়তো আজ আমি অস্পষ্ট, কিন্তু সময়ই আমার পরিচয় হয়ে উঠবে।”

আমরা যারা কিছু করতে চাই, তারা সমালোচনা পাবোই। যিনি কিছু করছেন না, তিনিই সমালোচনার বাইরে থাকেন। আপনি যদি বীজ বপন করেন, কেউ বলবে—“এই মাটি তো শুকনো”, কেউ বলবে—“এটা সময় নয়”, কেউ আবার বলবে—“তুমি তো চাষি নও।” কিন্তু একদিন সেই বীজ যদি অঙ্কুরিত হয়, তখন সকল সমালোচকের কণ্ঠে একটাই বাক্য থাকে—“আমি তো বলেছিলাম, তুমি পারবে!”

তাই বলি, সমালোচনার ভয় করবেন না। বরং সেটাকে কাজে লাগান। আপনি জানেন আপনি কে, কেন করছেন, কাদের জন্য করছেন। বাকিরা বলুক—সময়ই জবাব দেবে।

Cerca
Sponsorizzato
Categorie
Leggi tutto
Writing
Man vs. Society: The Most Relatable Conflict in Literature
In literature, conflict is the driving force that propels a story forward, and among the classic...
By Books of the Month 2025-02-16 04:48:13 9 7K
Self-Care & Mental Health
জ্ঞান বিতরণ
জ্ঞান বিতরণ: মানব সভ্যতার অগ্রগতির চাবিকাঠি জ্ঞান একটি মূল্যবান সম্পদ যা ব্যক্তি ও সমাজকে আলোকিত...
By Knowledge Sharing Bangladesh 2024-12-01 12:01:22 0 5K
Lifelong Learning
The Unstoppable Journey of Lifelong Learning
In an ever-changing world, the pursuit of knowledge knows no bounds. Lifelong learners are a...
By Adila Mim 2023-09-09 13:34:14 1 14K
Entertainment & Pop Culture
Ascendance of a Bookworm Where to Read After Anime
If you've just finished watching the Ascendance of a Bookworm anime and you're itching to dive...
By Books of the Month 2025-02-11 08:21:07 2 5K
Literature
সাহিত্যের প্রধান লক্ষণ কোনটি?
সাহিত্যের প্রধান লক্ষণ কোনটি সাহিত্য মানব সভ্যতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টি। এটি মানুষের আবেগ,...
By Knowledge Sharing Bangladesh 2024-12-03 13:48:21 0 4K
AT Reads https://atreads.com