লেখালেখির সাজসজ্জায় কোনটি ব্যবহৃত হয়?

লেখা মানে শুধু শব্দের স্তূপ নয়—লেখা মানে চিন্তার অভিব্যক্তি, অনুভবের প্রকাশ, আর সৌন্দর্যের পরিপাটি উপস্থাপন। আর এই সৌন্দর্যটাই তৈরি হয় লেখালেখির সাজসজ্জা দিয়ে। লেখার গঠন, ভাষার ভঙ্গি, অনুচ্ছেদ বিভাজন, শিরোনাম-উপশিরোনাম, এমনকি একটি শব্দের প্রয়োগেও লুকিয়ে থাকে সেই শৈলী যা পাঠককে একটানা টেনে নিয়ে যায় শুরু থেকে শেষ অবধি।
ধরুন, আপনি একটি গল্প লিখছেন। যদি লেখাটি শুরু হয় এভাবে—
“অনেকদিন পর গ্রামে ফিরলাম। মনটা কেমন জানি অদ্ভুত লাগছে।”
এটি একেবারে খারাপ নয়, কিন্তু কিছুটা সাধারণ। তবে লেখক যদি একটু অলংকার, ছন্দ, ও আবেগের পরত যোগ করেন, তাহলে একই বক্তব্য হয়ে উঠতে পারে এভাবে—
“অনেক ঋতু কেটে গেল, অনেক শহুরে ধুলো গায়ে মেখে, আজ আবার সেই শ্যামল গ্রামে ফেরা। বুকের ভেতর যেন অচেনা এক পাখি ডানা ঝাপটাচ্ছে।”
দুই লেখার মাঝে পার্থক্য শুধু ‘ভাব’ নয়—সেটি ‘উপস্থাপন’-এরও।
শুধু শুরুতেই নয়, লেখার মাঝে অনুচ্ছেদ বিভাজন গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, প্রেমের অনুভূতি নিয়ে লেখা হলে একটি অনুচ্ছেদে প্রথম দেখার বর্ণনা, আরেকটিতে আলাপ, এরপর ভুল–এভাবে ভাঙলে পাঠক একটানা বোঝে এবং লেখাটি পড়তে স্বস্তি পায়। একঘেয়ে বিশাল প্যারাগ্রাফে আবেগ হারিয়ে যায়।
শিরোনাম ও উপশিরোনাম লেখার গায়ে টাঙানো আলোকচিত্রের মতো। যেমন, একটি ব্লগে যদি লেখা হয়—
শিরোনাম: ভালোবাসা
এটি ঠিক আছে, তবে আরও আকর্ষণীয় হতে পারত—
শিরোনাম: ভালোবাসা—একটি অপ্রকাশিত দিনলিপি
এতে পাঠক আগ্রহী হন, জানতে চান, ‘কি আছে এই দিনলিপিতে?’
ভাষার ভেতরেও সাজসজ্জা গাঁথা থাকে। যেমন, আপনি লিখতে পারেন—
“সে খুব কাঁদছিল।”
কিন্তু আপনি যদি লেখেন—
“তার চোখ দিয়ে নদী বয়ে যাচ্ছিল, আর সেই জলের শব্দে আমি নির্বাক হয়ে গেলাম।”
তাহলে শব্দ পায় প্রাণ, আর পাঠক অনুভব করেন গভীরতা।
প্রুফরিডিং একান্তই প্রয়োজনীয়। বানান ভুল কিংবা ভুল বাক্য গঠন একটি সুন্দর লেখার সৌন্দর্য নষ্ট করতে পারে। যেমন, “শব্দ গুলি” (শব্দ + গুলি) ভুল, আসলে হওয়া উচিত “শব্দগুলি”।
একজন যতই গভীর কথা লিখুন না কেন, যদি সেখানে বারবার বানান ভুল থাকে, পাঠকের চোখে তা অগোছালো বলে মনে হয়।
এছাড়া ডিজিটাল লেখায় টাইপোগ্রাফির ব্যবহার একটি আধুনিক সাজসজ্জা। লেখায় Bold, Italic, Line spacing, Bullet points ব্যবহার করলে পাঠযোগ্যতা বাড়ে। উদাহরণস্বরূপ—
"ভালোবাসা আসলে কী?"
এই একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতেই আমরা অনেক গল্প লিখে ফেলি।
এইভাবে ব্লকের মধ্যে আলাদা করে দেওয়া হলে লেখাটি হয়ে ওঠে আরও দৃষ্টিনন্দন।
সবশেষে বলা যায়, লেখালেখির সাজসজ্জা শুধু বাহ্যিক নয়, এটি অন্তরঙ্গ এক শিল্প। ঠিক যেমন সাদা কাগজে তুলির ছোঁয়ায় ফুটে ওঠে রং, তেমনি শব্দের ভেতরেও ছড়িয়ে দেওয়া যায় রূপ। ভাবের শরীরে যখন শৃঙ্খলার পোশাক পড়ে, তখনই তা হয়ে ওঠে পাঠযোগ্য সাহিত্য।
- Book Reviews & Literary Discussions
- Writing
- Reading List
- Arts and Entertainment
- Personal Development
- Storytelling
- Startup
- Books
- Biography
- Dance
- Drinks
- Entertainment & Pop Culture
- Health & Fitness
- Education & Learning
- Food & Cooking
- الألعاب
- Gardening
- Self-Care & Mental Health
- Home Decor & DIY
- Literature
- Music
- Networking
- أخرى
- Party
- Philosophy and Religion
- المكان
- Shopping
- Relationships & Dating
- Sports
- Theater
- lifestyles & hobbies/shutterbugs
- Lifelong Learning
- Tutorial
- Announcement
- Inspirational Stories & Motivation