প্রবীণ কারা?

প্রবীণ শব্দটি সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, তবে এর সংজ্ঞা কেবল বয়সের সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সাধারণত ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের প্রবীণ হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে প্রবীণ হওয়ার অর্থ শুধুমাত্র শারীরিক বয়স বৃদ্ধি নয়; এটি অভিজ্ঞতা, জ্ঞান এবং জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের সংমিশ্রণ।
জাতিসংঘের মতে, ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের প্রবীণ (Older Persons) হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ এই বয়সসীমাকে ৬৫ বছর নির্ধারণ করে থাকে।
জাতিসংঘের মাদ্রিদ আন্তর্জাতিক কর্মপরিকল্পনা (2002) অনুযায়ী, প্রবীণদের শুধুমাত্র বয়সের ভিত্তিতে সংজ্ঞায়িত না করে তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রবীণদের জীবনমান উন্নয়নের মূল বিষয়গুলো:
✔ স্বাস্থ্য ও সুস্থতা – প্রবীণদের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।
✔ অর্থনৈতিক সুরক্ষা – প্রবীণদের জন্য পেনশন ও আর্থিক সহায়তা প্রদান।
✔ সামাজিক অন্তর্ভুক্তি – প্রবীণদের পরিবার, সমাজ ও কর্মক্ষেত্রে সম্পৃক্ত রাখা।
✔ মানবাধিকার – প্রবীণদের প্রতি বৈষম্য দূর করা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা।
জাতিসংঘ ১ অক্টোবরকে "আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস" হিসেবে পালন করে, যা প্রবীণদের অধিকার ও কল্যাণ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
প্রবীণদের বৈশিষ্ট্য
প্রবীণরা সমাজের অভিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ সদস্য। তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা নতুন প্রজন্মের জন্য শিক্ষার উৎস হতে পারে। প্রবীণরা সাধারণত নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য বহন করেন:
-
জীবনের অভিজ্ঞতা: দীর্ঘদিনের জীবনযাত্রার অভিজ্ঞতা তাদের জ্ঞান ও পরামর্শকে মূল্যবান করে তোলে।
-
পারিবারিক ও সামাজিক ভূমিকা: প্রবীণরা পরিবার ও সমাজের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখেন।
-
শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন: বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন ঘটে, যা তাদের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলে।
-
স্মৃতিচারণ: প্রবীণরা অতীতের গল্প ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পছন্দ করেন, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দিকনির্দেশনা হতে পারে।
প্রবীণদের চ্যালেঞ্জ
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক পরিবর্তন আসে, যা প্রবীণদের জীবনে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। এর মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হলো:
-
স্বাস্থ্যগত সমস্যা: উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
-
অর্থনৈতিক নিরাপত্তা: পেনশন, সঞ্চয় এবং পারিবারিক সহায়তার অভাব অনেক প্রবীণের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
-
সামাজিক বিচ্ছিন্নতা: একাকীত্ব ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতা প্রবীণদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
-
প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা: ডিজিটাল যুগে প্রবীণরা প্রযুক্তি ব্যবহারে অনেক সময় অসুবিধার সম্মুখীন হন।
প্রবীণদের কল্যাণে করণীয়
প্রবীণদের সুস্থ ও সম্মানজনক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করতে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে:
-
পরিবারের সহায়তা: প্রবীণদের প্রতি যত্নশীল হওয়া, তাদের সঙ্গে সময় কাটানো এবং মানসিক সমর্থন দেওয়া।
-
চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা: বিনামূল্যে বা স্বল্প খরচে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান নিশ্চিত করা।
-
সামাজিক সম্পৃক্ততা: প্রবীণদের জন্য বিশেষ সামাজিক ক্লাব, পাঠাগার, আড্ডার স্থান ও বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি করা।
-
প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ: প্রবীণদের স্মার্টফোন, ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে প্রশিক্ষণ দেওয়া।
-
প্রবীণদের অধিকার রক্ষা: প্রবীণদের জন্য নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন করে তাদের অধিকার সংরক্ষণ করা।
প্রবীণরা আমাদের সমাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও মূল্যবান অংশ। তাদের সঠিক যত্ন ও সম্মান দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। প্রবীণদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই প্রবীণদের জন্য একটি সুন্দর, স্বাস্থ্যকর ও সুখী জীবন নিশ্চিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।

- Book Reviews & Literary Discussions
- Writing
- Reading List
- Arts and Entertainment
- Personal Development
- Storytelling
- Startup
- Books
- Arts & Crafts
- Dance
- Drinks
- Entertainment & Pop Culture
- Health & Fitness
- Education & Learning
- Food & Cooking
- Παιχνίδια
- Gardening
- Self-Care & Mental Health
- Home Decor & DIY
- Literature
- Music
- Networking
- άλλο
- Party
- Philosophy and Religion
- Τόπος
- Shopping
- Relationships & Dating
- Sports
- Theater
- lifestyles & hobbies/shutterbugs
- Lifelong Learning
- Tutorial
- Announcement
- Inspirational Stories & Motivation