• **সাম্যবাদের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্য: প্রগতিশীল বাঙালি কাব্য আন্দোলনের উদ্দীপ্ত কণ্ঠস্বর**

    ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কলকাতার কালীঘাটের মহিমা হালদার স্ট্রিটের মামা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাঙালি সাহিত্যের প্রগতিশীল ধারার অগ্রণী কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্য। মাত্র ২১ বছরের জীবন, কিন্তু এই অল্প সময়েই তিনি বাংলা সাহিত্যে অনন্য স্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। তাঁর কাব্যিক সত্তা, সমাজে সাম্যবাদের স্বপ্ন এবং পরাধীনতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী চেতনা আজও অনুপ্রাণিত করে তরুণ প্রজন্মকে।

    ### সুকান্তের সাম্যবাদী চিন্তা ও বিপ্লবী চেতনা
    সুকান্তের কবিতা স্রেফ সাহিত্যিক সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ নয়; বরং তাতে ফুটে ওঠে সামাজিক অসাম্য ও শোষণের বিরুদ্ধে এক অব্যক্ত চিৎকার। তিনি সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য কলম ধরেছিলেন, এবং তাঁর কবিতায় এই বিদ্রোহী চেতনার প্রকাশ ছিল সরাসরি। তাঁর ‘ছাড়পত্র’, ‘ঘুম নেই’, ‘আকাল’ এবং অন্যান্য কবিতায় সমাজতান্ত্রিক ও সাম্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গির নিখুঁত প্রতিফলন দেখা যায়। এই কবিতাগুলিতে তিনি সমাজের প্রতি বঞ্চনা ও অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন।

    ### বাংলা কাব্যে এক নতুন ভাষার সূচনা
    সুকান্তের কবিতা ভাষাগতভাবে সোজাসাপ্টা ও সাধারণ মানুষের কথা নিয়ে। তাঁর প্রতিটি কবিতা যেন এক একটি শোষণ বিরোধী ও সংগ্রামের গল্প। সুকান্তের কাব্যের সহজ-সরল ভাষা ও বিষয়বস্তুর গভীরতা তাঁকে স্বতন্ত্র মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। "পোড় খাওয়া" কবিতায় তাঁর সাম্যবাদী স্বপ্নের প্রকাশ দেখা যায় – এক পৃথিবী যেখানে শোষণহীন সমাজ ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান থাকবে।

    ### বিপ্লবী আদর্শের মর্মবাণী
    সুকান্তের জীবন এবং সাহিত্য আমাদের উপলব্ধি করায় যে প্রকৃত বিপ্লবের পথ আসে ত্যাগ, সংগ্রাম ও সমবেদনাপূর্ণ মনোভাবের মাধ্যমে। সুকান্ত জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তাঁর আদর্শ থেকে এক চুলও সরে আসেননি। তাঁর রচিত প্রতিটি পংক্তি এবং শব্দ যেন তাঁকে স্মরণ করিয়ে দেয় এক সাম্যবাদী, পরিশ্রমী এবং অবিচল কবি হিসেবে।

    তাঁর কবিতা ও জীবনবোধ আমাদের মাঝে ফিরে আসে সাহস ও প্রেরণা হয়ে।
    **সাম্যবাদের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্য: প্রগতিশীল বাঙালি কাব্য আন্দোলনের উদ্দীপ্ত কণ্ঠস্বর** ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কলকাতার কালীঘাটের মহিমা হালদার স্ট্রিটের মামা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বাঙালি সাহিত্যের প্রগতিশীল ধারার অগ্রণী কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্য। মাত্র ২১ বছরের জীবন, কিন্তু এই অল্প সময়েই তিনি বাংলা সাহিত্যে অনন্য স্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। তাঁর কাব্যিক সত্তা, সমাজে সাম্যবাদের স্বপ্ন এবং পরাধীনতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী চেতনা আজও অনুপ্রাণিত করে তরুণ প্রজন্মকে। ### সুকান্তের সাম্যবাদী চিন্তা ও বিপ্লবী চেতনা সুকান্তের কবিতা স্রেফ সাহিত্যিক সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ নয়; বরং তাতে ফুটে ওঠে সামাজিক অসাম্য ও শোষণের বিরুদ্ধে এক অব্যক্ত চিৎকার। তিনি সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য কলম ধরেছিলেন, এবং তাঁর কবিতায় এই বিদ্রোহী চেতনার প্রকাশ ছিল সরাসরি। তাঁর ‘ছাড়পত্র’, ‘ঘুম নেই’, ‘আকাল’ এবং অন্যান্য কবিতায় সমাজতান্ত্রিক ও সাম্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গির নিখুঁত প্রতিফলন দেখা যায়। এই কবিতাগুলিতে তিনি সমাজের প্রতি বঞ্চনা ও অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন। ### বাংলা কাব্যে এক নতুন ভাষার সূচনা সুকান্তের কবিতা ভাষাগতভাবে সোজাসাপ্টা ও সাধারণ মানুষের কথা নিয়ে। তাঁর প্রতিটি কবিতা যেন এক একটি শোষণ বিরোধী ও সংগ্রামের গল্প। সুকান্তের কাব্যের সহজ-সরল ভাষা ও বিষয়বস্তুর গভীরতা তাঁকে স্বতন্ত্র মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। "পোড় খাওয়া" কবিতায় তাঁর সাম্যবাদী স্বপ্নের প্রকাশ দেখা যায় – এক পৃথিবী যেখানে শোষণহীন সমাজ ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান থাকবে। ### বিপ্লবী আদর্শের মর্মবাণী সুকান্তের জীবন এবং সাহিত্য আমাদের উপলব্ধি করায় যে প্রকৃত বিপ্লবের পথ আসে ত্যাগ, সংগ্রাম ও সমবেদনাপূর্ণ মনোভাবের মাধ্যমে। সুকান্ত জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তাঁর আদর্শ থেকে এক চুলও সরে আসেননি। তাঁর রচিত প্রতিটি পংক্তি এবং শব্দ যেন তাঁকে স্মরণ করিয়ে দেয় এক সাম্যবাদী, পরিশ্রমী এবং অবিচল কবি হিসেবে। তাঁর কবিতা ও জীবনবোধ আমাদের মাঝে ফিরে আসে সাহস ও প্রেরণা হয়ে।
    0 Comments 0 Shares 60 Views 0 Reviews
  • মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসায় টিপু সুলতানের একটি ভাস্কর্য রয়েছে, কারণ তিনি ছিলেন যুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের উদ্ভাবক। সাধারণভাবে মানুষ তাকে মহিশুরের সুলতান বললেও, প্রকৃতপক্ষে টিপু এবং তার বাবা হায়দার আলী মহিশুরের সুলতান ছিলেন না। তবে তাদের অবদান দক্ষিণ ভারতের এই ক্ষুদ্র রাজ্যটিকে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছিল।

    ভারতের ইতিহাসে টিপু সুলতান ও সম্রাট অশোকের নাম আজও সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। কর্ণাটকের মুসলমানরা টিপুকে শ্রদ্ধাভরে "হজরত টিপু সুলতান" বলে ডাকে, এবং হিন্দুরাও তাকে সম্মান করে। ব্রিটিশদের একমাত্র পরাজিত করার কৃতিত্ব টিপু ও হায়দার আলীর। চার দশক ধরে তারা মহিশুরের ক্ষমতাধর শাসক ছিলেন, যার ফলে মহিশুর ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজ্যে পরিণত হয়েছিল।

    টিপু সুলতানের পূর্বপুরুষদের মধ্যে একজন, ফতে মোহাম্মদ, সিরার নবাবের দরবারে উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রে তাকে হত্যা করা হয়। তার স্ত্রী মাজেদা বেগম সংগ্রাম করে দুই পুত্র শাহবাজ ও হায়দার আলীকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করেন, যার মাধ্যমে তাদের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হয়।
    মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসায় টিপু সুলতানের একটি ভাস্কর্য রয়েছে, কারণ তিনি ছিলেন যুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের উদ্ভাবক। সাধারণভাবে মানুষ তাকে মহিশুরের সুলতান বললেও, প্রকৃতপক্ষে টিপু এবং তার বাবা হায়দার আলী মহিশুরের সুলতান ছিলেন না। তবে তাদের অবদান দক্ষিণ ভারতের এই ক্ষুদ্র রাজ্যটিকে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছিল। ভারতের ইতিহাসে টিপু সুলতান ও সম্রাট অশোকের নাম আজও সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। কর্ণাটকের মুসলমানরা টিপুকে শ্রদ্ধাভরে "হজরত টিপু সুলতান" বলে ডাকে, এবং হিন্দুরাও তাকে সম্মান করে। ব্রিটিশদের একমাত্র পরাজিত করার কৃতিত্ব টিপু ও হায়দার আলীর। চার দশক ধরে তারা মহিশুরের ক্ষমতাধর শাসক ছিলেন, যার ফলে মহিশুর ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজ্যে পরিণত হয়েছিল। টিপু সুলতানের পূর্বপুরুষদের মধ্যে একজন, ফতে মোহাম্মদ, সিরার নবাবের দরবারে উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। কিন্তু প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রে তাকে হত্যা করা হয়। তার স্ত্রী মাজেদা বেগম সংগ্রাম করে দুই পুত্র শাহবাজ ও হায়দার আলীকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করেন, যার মাধ্যমে তাদের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হয়।
    0 Comments 0 Shares 132 Views 0 Reviews
  • দুই বন্ধু মরুভূমির পথ ধরে হাঁটছিল। গরম রোদের তাপে ক্লান্ত, তবুও এগিয়ে চলেছিল তারা। হঠাৎ তাদের মধ্যে তর্ক শুরু হল। তর্ক বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে গেল যে, এক বন্ধু আরেক বন্ধুর মুখে আচমকা ঘুষি বসিয়ে দিল। আঘাত খেয়ে আহত বন্ধুটি কিছু না বলে বালুর ওপর লিখল, “আজ আমার বন্ধু আমার মুখে ঘুষি মেরেছে।”

    কিছুক্ষণ পর তাদের মনোমালিন্যও মিলিয়ে গেল, আর তারা আবারও একসঙ্গে পথ চলা শুরু করল। কিছুদূর এগিয়ে একটি ঝরনার কাছে এসে পৌঁছালো তারা। পানির কোলাহল তাদের ক্লান্তি কিছুটা লাঘব করল। ঝরনা পার হওয়ার সময় সেই বন্ধুটি যাকে ঘুষি মারা হয়েছিল, পাথরে পা হড়কে পানির স্রোতে ভেসে যেতে বসলো। সে সাঁতার জানত না, তাই তীব্র আতঙ্কে চিৎকার করতে শুরু করল। ঠিক তখনই তার বন্ধু কোনো কিছু না ভেবে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে উদ্ধার করল এবং মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচালো।

    এই ঘটনার পর ঘুষি খাওয়া বন্ধুটি পাথরের ওপর খোদাই করে লিখল, “আজ আমার বন্ধু আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে।”

    এটা দেখে প্রথম বন্ধুটি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “কিরে, যখন তোকে চড় মারলাম তখন লিখলি বালিতে, আর আজ যখন বাঁচালাম তখন লিখলি পাথরে! এর কারণ কি?”

    বন্ধুটি মৃদু হেসে উত্তর দিল, “যখন কেউ আমাদের কষ্ট দেয়, সেটা বালিতে লিখতে হয়, যাতে ভালবাসা আর মায়ার বাতাস এসে তা মুছে ফেলতে পারে। কিন্তু যখন কেউ আমাদের উপকার করে, সেটা পাথরে খোদাই করতে হয়, যাতে কোনোদিনও তা মুছে না যায়।”

    বাস্তবে আমরা প্রায়ই এই শিক্ষাটিকে ভুলে যাই। ক্ষতির জন্য রাগ, হিংসা বা ঘৃণাকে মনে আঁকড়ে ধরি, অথচ উপকারের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভুলে যাই। এই মনোভাব সম্পর্ক নষ্ট করে, সমাজে বিভেদ ও বৈষম্যের সৃষ্টি করে।

    তাই আমাদের উচিত যে কেউ কোনো ভুল করলে তা ভুলে যাওয়া এবং ক্ষমা করে দেওয়া। আর কেউ যদি আমাদের সাহায্য করে, সেটা মনে রেখে কৃতজ্ঞ থাকা। এভাবেই ছোট ছোট ভালো কাজের মাধ্যমে আমরা সাম্যের সমাজ গড়ে তুলতে পারি। প্রত্যেকে নিজের কাজটা সঠিকভাবে করলে সমাজে শান্তি এবং সৌহার্দ্য বজায় থাকবে।

    একটা উন্নত সমাজ গড়তে হলে, আগে আমাদের নিজেদের মানসিকতা ও আচরণ পরিবর্তন করতে হবে। একজন অন্যের পাশে দাঁড়ালে, তবেই সামগ্রিক পরিবর্তন সম্ভব হবে।
    #story
    দুই বন্ধু মরুভূমির পথ ধরে হাঁটছিল। গরম রোদের তাপে ক্লান্ত, তবুও এগিয়ে চলেছিল তারা। হঠাৎ তাদের মধ্যে তর্ক শুরু হল। তর্ক বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে গেল যে, এক বন্ধু আরেক বন্ধুর মুখে আচমকা ঘুষি বসিয়ে দিল। আঘাত খেয়ে আহত বন্ধুটি কিছু না বলে বালুর ওপর লিখল, “আজ আমার বন্ধু আমার মুখে ঘুষি মেরেছে।” কিছুক্ষণ পর তাদের মনোমালিন্যও মিলিয়ে গেল, আর তারা আবারও একসঙ্গে পথ চলা শুরু করল। কিছুদূর এগিয়ে একটি ঝরনার কাছে এসে পৌঁছালো তারা। পানির কোলাহল তাদের ক্লান্তি কিছুটা লাঘব করল। ঝরনা পার হওয়ার সময় সেই বন্ধুটি যাকে ঘুষি মারা হয়েছিল, পাথরে পা হড়কে পানির স্রোতে ভেসে যেতে বসলো। সে সাঁতার জানত না, তাই তীব্র আতঙ্কে চিৎকার করতে শুরু করল। ঠিক তখনই তার বন্ধু কোনো কিছু না ভেবে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে উদ্ধার করল এবং মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচালো। এই ঘটনার পর ঘুষি খাওয়া বন্ধুটি পাথরের ওপর খোদাই করে লিখল, “আজ আমার বন্ধু আমাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে।” এটা দেখে প্রথম বন্ধুটি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “কিরে, যখন তোকে চড় মারলাম তখন লিখলি বালিতে, আর আজ যখন বাঁচালাম তখন লিখলি পাথরে! এর কারণ কি?” বন্ধুটি মৃদু হেসে উত্তর দিল, “যখন কেউ আমাদের কষ্ট দেয়, সেটা বালিতে লিখতে হয়, যাতে ভালবাসা আর মায়ার বাতাস এসে তা মুছে ফেলতে পারে। কিন্তু যখন কেউ আমাদের উপকার করে, সেটা পাথরে খোদাই করতে হয়, যাতে কোনোদিনও তা মুছে না যায়।” বাস্তবে আমরা প্রায়ই এই শিক্ষাটিকে ভুলে যাই। ক্ষতির জন্য রাগ, হিংসা বা ঘৃণাকে মনে আঁকড়ে ধরি, অথচ উপকারের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভুলে যাই। এই মনোভাব সম্পর্ক নষ্ট করে, সমাজে বিভেদ ও বৈষম্যের সৃষ্টি করে। তাই আমাদের উচিত যে কেউ কোনো ভুল করলে তা ভুলে যাওয়া এবং ক্ষমা করে দেওয়া। আর কেউ যদি আমাদের সাহায্য করে, সেটা মনে রেখে কৃতজ্ঞ থাকা। এভাবেই ছোট ছোট ভালো কাজের মাধ্যমে আমরা সাম্যের সমাজ গড়ে তুলতে পারি। প্রত্যেকে নিজের কাজটা সঠিকভাবে করলে সমাজে শান্তি এবং সৌহার্দ্য বজায় থাকবে। একটা উন্নত সমাজ গড়তে হলে, আগে আমাদের নিজেদের মানসিকতা ও আচরণ পরিবর্তন করতে হবে। একজন অন্যের পাশে দাঁড়ালে, তবেই সামগ্রিক পরিবর্তন সম্ভব হবে। #story
    0 Comments 0 Shares 192 Views 0 Reviews
  • ### প্রথম দেখা

    সোনাগাছির এক গরম সন্ধ্যায়, রাস্তার এক মোড়ের সামনে স্বপ্না তার দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যস্ত ছিল। হঠাৎ করেই একজন লোক তার দিকে এগিয়ে আসল।

    **ব্যক্তি:** নাম কি তোমার?

    **স্বপ্না:** কেন নাম দিয়ে ধুয়ে খাবেন, স্বপ্না আমার নাম।

    **ব্যক্তি:** বয়স কত?

    **স্বপ্না:** কেন বাবু, বয়স শুনলে ২০০ আরো বেশি দেবেন?

    **ব্যক্তি:** এমনভাবে কথা বলছো কেন?

    **স্বপ্না:** ভালোভাবে কথা বলার জন্য তো এক্সট্রা পয়সা দেননি, বাবু!

    ### কথোপকথনের খোঁজ

    ব্যক্তিটি কিছুটা অস্বস্তিতে ছিল, কিন্তু স্বপ্নার সরাসরি কথায় সে মনোযোগী হয়।

    **ব্যক্তি:** তা বলে এইভাবে কথা বলার জন্যও তো কম পয়সা নাওনি?

    **স্বপ্না:** বাবু, পয়সা তো শুধু শরীরের জন্যই, কেনোই বা সময় নষ্ট করছেন, শুরু করুন!

    **ব্যক্তি:** সিগারেট খেতে পারি একটা?

    **স্বপ্না:** খান না, আমাকে জিজ্ঞেস করছেন কেন!

    **ব্যক্তি:** না মানে, যদি সমস্যা থাকে…

    **স্বপ্না:** বাব্বা, পারি না গো পারিনা, ***তে এসে এতো ন্যাকামো আসে কিভাবে আপনার!

    ### সত্যিকারের দুঃখ

    স্বপ্নার মুখে যেন নিজের জীবনের এক অন্ধকার গল্প ফুটে ওঠে।

    **ব্যক্তি:** এমন কেন বলছো? সমস্যা তো থাকতেই পারে অনেকের সিগারেটে!

    **স্বপ্না:** বাবু, সমস্যা তো প্রাণীর থাকে, আমরা তো জড়ো পদার্থ।

    **ব্যক্তি:** একটু বেশিই বাজে বকছো, সমস্যা আছে কিনা তাই জিজ্ঞেস করলাম!

    **স্বপ্না:** তবে রে, অনেকক্ষন ধরে বড্ডো ***চ্ছেন, এবার নিজের সমস্যা দূর করে বিদায় হন তো, শুরু করুন!

    **ব্যক্তি:** হ্যাঁ।

    **স্বপ্না:** খুলবো? না নিজেই খুলবেন?

    **ব্যক্তি:** হ্যাঁ… না… হ্যাঁ আমিই.. না…

    **স্বপ্না:** ওহ বুঝেছি, সোনাগাছিতে প্রথমবার?

    **ব্যক্তিটি:** হ্যাঁ।

    **স্বপ্না:** কেনো? গার্লফ্রেন্ড দেয়নি?

    **ব্যক্তি:** না না, গার্লফ্রেন্ড টালফ্রেন্ড নেই।

    **স্বপ্না:** এমন গা জ্বালানো পাবলিক হলে গার্লফ্রেন্ড হবেই বা কি করে!

    **ব্যক্তি:** না না, আমি বিবাহিত!!

    **স্বপ্না:** তো? বউ কি রাতে ডিস্কো গেছে? আর আপনি এলেন সোনাগাছি? সত্যিই মাইরি, আপনারা বড়লোকরাই পারেন এমন নাটক ***তে!

    ### আবেগের প্রকাশ

    ব্যক্তিটির কণ্ঠে আবেগের ছোঁয়া স্পষ্ট।

    **ব্যক্তি:** না না, আমি ওই জন্য আসিনি, বউকে খুঁজতে এসেছি!

    **স্বপ্না:** মানে?

    **ব্যক্তি:** হ্যাঁ, জানেন.... রাতে শপিং করে ফিরছিলাম দুজনেই, আমি আর আমার স্ত্রী উত্তরা, হঠাৎ ৪ জন এলো, আমাদের দুজনের মুখে রুমাল চেপে ধরলো, জ্ঞান ফিরলো যখন, পরদিন সকালে আমি স্থানীয় একটা হসপিটালে বেডে শুয়ে আছি, উত্তরা নেই, অনেক খুঁজেছি জানেন, কোথাও পাইনি।

    **স্বপ্না:** তা, হঠাৎ আজ রাতে সোনাগাছিতে একরাতের জন্য বউ খুঁজতে এলেন বুঝি?

    **ব্যক্তি:** না, বলছি, প্লিজ পুরোটা শুনুন, ওই রাতের ঘটনার ২৬ দিনের মাথায় মানে গতকাল স্ত্রীর ফোন আসে, শুধু বললো সোনাগাছিতে এসে আমাকে নিয়ে যেও, নাম আমার নিশা…. আমি কিছু বলার আগেই ফোনটা কেটে দিলো উত্তরা। বুঝতে পেরেছিলাম হয়তো ৫ সেকেন্ডের সুযোগটাই পেয়েছিলো আমাকে জানানোর জন্য। তারপর কাল থেকে যতবার ফোন করেছি ওই নম্বরে, ফোন লাগে নি আর.… তাই আমি খুঁজতে এসেছি উত্তরাকে!! জানি এতো বড় সোনাগাছিতে আমার স্ত্রীকে খোঁজা সম্ভব নয়, শুধু চাই তোমার মতো একজন বন্ধু যে আমার স্ত্রীকে খুঁজে বের করে দেবে এই নরক থেকে। প্লিজ তুমি খুঁজে দাও আমার উত্তরাকে, যা লাগবে আমি তোমাকে দেবো!!

    **স্বপ্না:** আমার কি লাগবে সে দাবি না হয় আপনাকে পরেই বলবো, তবে পারবেন নিজের স্ত্রীকে এখান থেকে ফিরিয়ে নিতে সব কিছু জেনেও?

    **ব্যক্তি:** কেনো পারবো না? আমি তো বেশ্যা নিশাকে কিনতে আসিনি, স্ত্রী উত্তরা কে ফেরাতে এসেছি! তুমি তো কত দালাল, কত মাসি কে চেনো…. প্লিজ ফিরিয়ে দাও আমার উত্তরা কে!!

    **স্বপ্না:** আচ্ছা, আপনার নম্বরটা দিয়ে যান, আমি আপনাকে জানাবো কথা দিলাম যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।

    ### আশা ও সহানুভূতি

    স্বপ্না কিছুদিন পর ব্যক্তিটিকে ফোন করে খবর দেয়।

    **স্বপ্না:** শুনছেন? নিশার খবর পেয়েছি.... আমার বিল্ডিঙের ডান দিকের ৩ নং বিল্ডিয়েই নিশা থাকে, এখানে নতুন তো তাই হাতে ফোন পায়না, আর হ্যাঁ, হয়তো কোনো বাবুর ফোন থেকেই আপনাকে সেদিন ৫ সেকেন্ডের জন্য ফোন করতে পেরেছিলো, নিয়ে যান আপনার নিশাকে!!

    ### উদ্ধার ও নতুন সম্পর্ক

    পুলিশের সাথে নিয়ে স্বপ্না ব্যক্তিটিকে নিশা (অর্থাৎ উত্তরা) উদ্ধার করে। ফেরার পথে তারা স্বপ্নার সাথে দেখা করে।

    **ব্যক্তি:** কি বলে ধন্যবাদ দেবো তোমায়, নিজেও জানিনা, এবার বলো তোমার কত টাকা লাগবে?

    **স্বপ্না:** টাকা লাগবে না, টাকার থেকেও অনেক বেশি কিছু আপনি আমাকে দিয়ে গেলেন, বাবু!!

    **ব্যক্তি:** মানে? কি বলতে চাইছো? কিছুই বুঝলাম না…

    **স্বপ্না:** জানেন বাবু? আজ থেকে ৩ বছর আগে গ্রামেরই একটা ছেলে কে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম, খুব ভালোবাসতাম!! বাবা মা মানে নি তাই পালিয়ে বিয়ে করেছিলাম…. জানেন বাবু? বিয়ের ১৯ দিনের মাথায় আমাকে এই নরকে বিক্রি করে দিয়ে যায় ১৩ হাজার টাকায়!! অনেকবার এখান থেকে পালিয়ে যাবার চান্স পেয়েছিলাম, কিন্তু কোথায় যাবো বলুন, বাবা-মার সামনে কোন মুখে দাঁড়াবো, রাস্তায় নামলেও তো সেই আমাকে ছিঁড়েই খাবে সমাজের বাবুরা রাতের অন্ধকারে, আর দিনের বেলায় খেপি সাজিয়ে রাখবে রেল স্টেশনের চাঁতালে!! তার থেকে বরং এখানে দিব্যি খেতে বাঁচতে তো পারছি!! বিশ্বাস করুন বাবু, সেদিন থেকে কোনো পুরুষ কে মন থেকে সহ্য করতে পারি না, কোনো পুরুষ কে বিশ্বাস করতেও পারিনা, শুধু এটাই মনে হতো সব পুরুষ সমান…. ৩ দিন আগে আপনি আমার সেই ভুল ভাঙলেন। নতুন করে বিশ্বাস করতে শিখলাম, একটা পুরুষ যেমন তার স্ত্রীকে বিক্রি করতেও পারে সোনাগাছিতে, তেমন কোনো পুরুষ তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতেও পারে সোনাগাছি থেকে!! গতর খাটিয়ে পয়সা তো ৩ বছরে অনেক রোজগার করেছি বাবু, তবে ৩ বছরে যে ভুলটা রোজ ভেবে এসেছি, সেই ভুলটা আপনি ৫ মিনিটেই ভেঙে দিলেন। যেটা পয়সার থেকেও অনেক দামি!! যান বাবু, ভালো থাকবেন আপনার উত্তরা কে নিয়ে!! আর অনেক ধন্যবাদ এই সত্যিটা আমাকে বুঝিয়ে দিয়ে যাবার জন্য “সব পুরুষ সমান নয়”….. কেউ রেখে যায়, কেউ নিয়ে যায়….!! কেউ রাখতে আসে, কেউ ফেরাতে আসে….!!

    ### সমাপ্তি

    স্বপ্নার হৃদয়ে এক নতুন আশা জেগে ওঠে। তিন বছর যাবত তাকে হতাশা ও একাকীত্বে ভরিয়ে রাখলেও, আজ একজন মানুষের সহানুভূতি ও সহায়তায় সে নিজের জীবনে নতুন আলো দেখতে পায়। তার আত্মনির্ভরশীলতা ও সাহসিকতা তাকে শুধু নিজের জীবন নয়, অন্যের জীবনও বদলে দিতে সক্ষম হয়েছে। স্বপ্না বুঝতে পারে, জীবনের কঠিন পথে একা চলার থেকেও ভালো, কখনো কখনো মানুষের সহানুভূতি ও ভালোবাসা জীবনে নতুন অর্থ যোগ করে দেয়।

    **শেষ।**
    #story
    ### প্রথম দেখা সোনাগাছির এক গরম সন্ধ্যায়, রাস্তার এক মোড়ের সামনে স্বপ্না তার দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যস্ত ছিল। হঠাৎ করেই একজন লোক তার দিকে এগিয়ে আসল। **ব্যক্তি:** নাম কি তোমার? **স্বপ্না:** কেন নাম দিয়ে ধুয়ে খাবেন, স্বপ্না আমার নাম। **ব্যক্তি:** বয়স কত? **স্বপ্না:** কেন বাবু, বয়স শুনলে ২০০ আরো বেশি দেবেন? **ব্যক্তি:** এমনভাবে কথা বলছো কেন? **স্বপ্না:** ভালোভাবে কথা বলার জন্য তো এক্সট্রা পয়সা দেননি, বাবু! ### কথোপকথনের খোঁজ ব্যক্তিটি কিছুটা অস্বস্তিতে ছিল, কিন্তু স্বপ্নার সরাসরি কথায় সে মনোযোগী হয়। **ব্যক্তি:** তা বলে এইভাবে কথা বলার জন্যও তো কম পয়সা নাওনি? **স্বপ্না:** বাবু, পয়সা তো শুধু শরীরের জন্যই, কেনোই বা সময় নষ্ট করছেন, শুরু করুন! **ব্যক্তি:** সিগারেট খেতে পারি একটা? **স্বপ্না:** খান না, আমাকে জিজ্ঞেস করছেন কেন! **ব্যক্তি:** না মানে, যদি সমস্যা থাকে… **স্বপ্না:** বাব্বা, পারি না গো পারিনা, ***তে এসে এতো ন্যাকামো আসে কিভাবে আপনার! ### সত্যিকারের দুঃখ স্বপ্নার মুখে যেন নিজের জীবনের এক অন্ধকার গল্প ফুটে ওঠে। **ব্যক্তি:** এমন কেন বলছো? সমস্যা তো থাকতেই পারে অনেকের সিগারেটে! **স্বপ্না:** বাবু, সমস্যা তো প্রাণীর থাকে, আমরা তো জড়ো পদার্থ। **ব্যক্তি:** একটু বেশিই বাজে বকছো, সমস্যা আছে কিনা তাই জিজ্ঞেস করলাম! **স্বপ্না:** তবে রে, অনেকক্ষন ধরে বড্ডো ***চ্ছেন, এবার নিজের সমস্যা দূর করে বিদায় হন তো, শুরু করুন! **ব্যক্তি:** হ্যাঁ। **স্বপ্না:** খুলবো? না নিজেই খুলবেন? **ব্যক্তি:** হ্যাঁ… না… হ্যাঁ আমিই.. না… **স্বপ্না:** ওহ বুঝেছি, সোনাগাছিতে প্রথমবার? **ব্যক্তিটি:** হ্যাঁ। **স্বপ্না:** কেনো? গার্লফ্রেন্ড দেয়নি? **ব্যক্তি:** না না, গার্লফ্রেন্ড টালফ্রেন্ড নেই। **স্বপ্না:** এমন গা জ্বালানো পাবলিক হলে গার্লফ্রেন্ড হবেই বা কি করে! **ব্যক্তি:** না না, আমি বিবাহিত!! **স্বপ্না:** তো? বউ কি রাতে ডিস্কো গেছে? আর আপনি এলেন সোনাগাছি? সত্যিই মাইরি, আপনারা বড়লোকরাই পারেন এমন নাটক ***তে! ### আবেগের প্রকাশ ব্যক্তিটির কণ্ঠে আবেগের ছোঁয়া স্পষ্ট। **ব্যক্তি:** না না, আমি ওই জন্য আসিনি, বউকে খুঁজতে এসেছি! **স্বপ্না:** মানে? **ব্যক্তি:** হ্যাঁ, জানেন.... রাতে শপিং করে ফিরছিলাম দুজনেই, আমি আর আমার স্ত্রী উত্তরা, হঠাৎ ৪ জন এলো, আমাদের দুজনের মুখে রুমাল চেপে ধরলো, জ্ঞান ফিরলো যখন, পরদিন সকালে আমি স্থানীয় একটা হসপিটালে বেডে শুয়ে আছি, উত্তরা নেই, অনেক খুঁজেছি জানেন, কোথাও পাইনি। **স্বপ্না:** তা, হঠাৎ আজ রাতে সোনাগাছিতে একরাতের জন্য বউ খুঁজতে এলেন বুঝি? **ব্যক্তি:** না, বলছি, প্লিজ পুরোটা শুনুন, ওই রাতের ঘটনার ২৬ দিনের মাথায় মানে গতকাল স্ত্রীর ফোন আসে, শুধু বললো সোনাগাছিতে এসে আমাকে নিয়ে যেও, নাম আমার নিশা…. আমি কিছু বলার আগেই ফোনটা কেটে দিলো উত্তরা। বুঝতে পেরেছিলাম হয়তো ৫ সেকেন্ডের সুযোগটাই পেয়েছিলো আমাকে জানানোর জন্য। তারপর কাল থেকে যতবার ফোন করেছি ওই নম্বরে, ফোন লাগে নি আর.… তাই আমি খুঁজতে এসেছি উত্তরাকে!! জানি এতো বড় সোনাগাছিতে আমার স্ত্রীকে খোঁজা সম্ভব নয়, শুধু চাই তোমার মতো একজন বন্ধু যে আমার স্ত্রীকে খুঁজে বের করে দেবে এই নরক থেকে। প্লিজ তুমি খুঁজে দাও আমার উত্তরাকে, যা লাগবে আমি তোমাকে দেবো!! **স্বপ্না:** আমার কি লাগবে সে দাবি না হয় আপনাকে পরেই বলবো, তবে পারবেন নিজের স্ত্রীকে এখান থেকে ফিরিয়ে নিতে সব কিছু জেনেও? **ব্যক্তি:** কেনো পারবো না? আমি তো বেশ্যা নিশাকে কিনতে আসিনি, স্ত্রী উত্তরা কে ফেরাতে এসেছি! তুমি তো কত দালাল, কত মাসি কে চেনো…. প্লিজ ফিরিয়ে দাও আমার উত্তরা কে!! **স্বপ্না:** আচ্ছা, আপনার নম্বরটা দিয়ে যান, আমি আপনাকে জানাবো কথা দিলাম যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। ### আশা ও সহানুভূতি স্বপ্না কিছুদিন পর ব্যক্তিটিকে ফোন করে খবর দেয়। **স্বপ্না:** শুনছেন? নিশার খবর পেয়েছি.... আমার বিল্ডিঙের ডান দিকের ৩ নং বিল্ডিয়েই নিশা থাকে, এখানে নতুন তো তাই হাতে ফোন পায়না, আর হ্যাঁ, হয়তো কোনো বাবুর ফোন থেকেই আপনাকে সেদিন ৫ সেকেন্ডের জন্য ফোন করতে পেরেছিলো, নিয়ে যান আপনার নিশাকে!! ### উদ্ধার ও নতুন সম্পর্ক পুলিশের সাথে নিয়ে স্বপ্না ব্যক্তিটিকে নিশা (অর্থাৎ উত্তরা) উদ্ধার করে। ফেরার পথে তারা স্বপ্নার সাথে দেখা করে। **ব্যক্তি:** কি বলে ধন্যবাদ দেবো তোমায়, নিজেও জানিনা, এবার বলো তোমার কত টাকা লাগবে? **স্বপ্না:** টাকা লাগবে না, টাকার থেকেও অনেক বেশি কিছু আপনি আমাকে দিয়ে গেলেন, বাবু!! **ব্যক্তি:** মানে? কি বলতে চাইছো? কিছুই বুঝলাম না… **স্বপ্না:** জানেন বাবু? আজ থেকে ৩ বছর আগে গ্রামেরই একটা ছেলে কে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম, খুব ভালোবাসতাম!! বাবা মা মানে নি তাই পালিয়ে বিয়ে করেছিলাম…. জানেন বাবু? বিয়ের ১৯ দিনের মাথায় আমাকে এই নরকে বিক্রি করে দিয়ে যায় ১৩ হাজার টাকায়!! অনেকবার এখান থেকে পালিয়ে যাবার চান্স পেয়েছিলাম, কিন্তু কোথায় যাবো বলুন, বাবা-মার সামনে কোন মুখে দাঁড়াবো, রাস্তায় নামলেও তো সেই আমাকে ছিঁড়েই খাবে সমাজের বাবুরা রাতের অন্ধকারে, আর দিনের বেলায় খেপি সাজিয়ে রাখবে রেল স্টেশনের চাঁতালে!! তার থেকে বরং এখানে দিব্যি খেতে বাঁচতে তো পারছি!! বিশ্বাস করুন বাবু, সেদিন থেকে কোনো পুরুষ কে মন থেকে সহ্য করতে পারি না, কোনো পুরুষ কে বিশ্বাস করতেও পারিনা, শুধু এটাই মনে হতো সব পুরুষ সমান…. ৩ দিন আগে আপনি আমার সেই ভুল ভাঙলেন। নতুন করে বিশ্বাস করতে শিখলাম, একটা পুরুষ যেমন তার স্ত্রীকে বিক্রি করতেও পারে সোনাগাছিতে, তেমন কোনো পুরুষ তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতেও পারে সোনাগাছি থেকে!! গতর খাটিয়ে পয়সা তো ৩ বছরে অনেক রোজগার করেছি বাবু, তবে ৩ বছরে যে ভুলটা রোজ ভেবে এসেছি, সেই ভুলটা আপনি ৫ মিনিটেই ভেঙে দিলেন। যেটা পয়সার থেকেও অনেক দামি!! যান বাবু, ভালো থাকবেন আপনার উত্তরা কে নিয়ে!! আর অনেক ধন্যবাদ এই সত্যিটা আমাকে বুঝিয়ে দিয়ে যাবার জন্য “সব পুরুষ সমান নয়”….. কেউ রেখে যায়, কেউ নিয়ে যায়….!! কেউ রাখতে আসে, কেউ ফেরাতে আসে….!! ### সমাপ্তি স্বপ্নার হৃদয়ে এক নতুন আশা জেগে ওঠে। তিন বছর যাবত তাকে হতাশা ও একাকীত্বে ভরিয়ে রাখলেও, আজ একজন মানুষের সহানুভূতি ও সহায়তায় সে নিজের জীবনে নতুন আলো দেখতে পায়। তার আত্মনির্ভরশীলতা ও সাহসিকতা তাকে শুধু নিজের জীবন নয়, অন্যের জীবনও বদলে দিতে সক্ষম হয়েছে। স্বপ্না বুঝতে পারে, জীবনের কঠিন পথে একা চলার থেকেও ভালো, কখনো কখনো মানুষের সহানুভূতি ও ভালোবাসা জীবনে নতুন অর্থ যোগ করে দেয়। **শেষ।** #story
    0 Comments 0 Shares 224 Views 0 Reviews
  • শ্বশুরবাড়ির সবচেয়ে বেয়াদব বউটিকে নিয়ে গল্প শুরু হয় বিয়ের পরপরই। পরিবারটির মানসিকতা আর রুচির সঙ্গে তার আচরণ যেন কিছুতেই মানাতে পারে না। ঘুমিয়ে থাকা, সালোয়ার-কামিজ পরা, মাছ পছন্দ করা—এসবই তাদের চোখে অপরাধ। যেটা সবচেয়ে অপছন্দের, সেটা হলো তার স্পষ্টভাষী হওয়া। মুখের ওপর যা সত্য, তাই বলে দেন। এ কারণে বারবার সমালোচনা শুনতে হয়। শাশুড়ি আর অন্যান্য আত্মীয়দের নিত্য অভিযোগ, "মা কিছু শিখায় নাই?" অথচ তারা জানে, তার মা আর বেঁচে নেই।

    বিয়ের প্রথম কিছু বছর তার জন্য ছিল এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। শাশুড়ি আর দুই আত্মীয়া তার নামে অহেতুক কুৎসা রটাতে লাগল। এমনও হয়েছে যে তার স্বামীকে ভুল বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলেছে। তিনি ভেবেছিলেন হয়তো একটু মানিয়ে চললে সবাই ভালোবাসবে, তবে সময়ের সঙ্গে বুঝলেন এই আশা বৃথা। তাই তিনি নিজের মতো চলার সিদ্ধান্ত নিলেন, সমালোচনাগুলোকে পাত্তা না দিয়ে।

    ধীরে ধীরে তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। তিনি নিজেকে আত্মনির্ভর করে তোলেন। কাজ শুরু করেন এবং নিজের অর্থ উপার্জন শুরু করেন। কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাস আর সাহস নিয়ে নিজের মতো করে জীবন গড়তে থাকেন। তখনই শুরু হয় সম্পর্কের বদল। যারা একসময় তাকে "চটপটে" বলে বিদ্রূপ করত, তারা এখন তাকে খুশি করতে ব্যস্ত। তার রান্না একসময় নাক সিটকিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হতো, এখন তারই হাতের রান্না খেতে তাদের আগ্রহ ধরে না। যারা ফোন ব্যবহারের জন্য তিরস্কার করত, তারা এখন তার ফোন নিয়ে থাকা দেখে কিছু বলে না।

    এই পরিবর্তন দেখে তিনি বুঝলেন যে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার গুরুত্ব কতখানি। নিজের উপার্জন তাকে শুধু সম্মানই এনে দেয়নি, বরং তার কথাকে মূল্য দিতেও বাধ্য করেছে। এই ক'বছরের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি উপলব্ধি করলেন—অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন না হলে সমাজের সম্মান পাওয়া কঠিন। পরিবারে যারা একসময় তাকে বোঝা মনে করত, তারা এখন তাকে মাথায় করে রাখে, শুধু তার উপার্জনের জন্যই।

    তিনি এখন বিশ্বাস করেন, "মানি ইজ সেকেন্ড গড"—অর্থের কারণে তাকে সম্মান দেওয়া হচ্ছে, যদিও ভালোবাসা নয়। তবু আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠার গুরুত্ব তাকে জীবনের কঠিন সত্য শিখিয়েছে।
    #story
    শ্বশুরবাড়ির সবচেয়ে বেয়াদব বউটিকে নিয়ে গল্প শুরু হয় বিয়ের পরপরই। পরিবারটির মানসিকতা আর রুচির সঙ্গে তার আচরণ যেন কিছুতেই মানাতে পারে না। ঘুমিয়ে থাকা, সালোয়ার-কামিজ পরা, মাছ পছন্দ করা—এসবই তাদের চোখে অপরাধ। যেটা সবচেয়ে অপছন্দের, সেটা হলো তার স্পষ্টভাষী হওয়া। মুখের ওপর যা সত্য, তাই বলে দেন। এ কারণে বারবার সমালোচনা শুনতে হয়। শাশুড়ি আর অন্যান্য আত্মীয়দের নিত্য অভিযোগ, "মা কিছু শিখায় নাই?" অথচ তারা জানে, তার মা আর বেঁচে নেই। বিয়ের প্রথম কিছু বছর তার জন্য ছিল এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। শাশুড়ি আর দুই আত্মীয়া তার নামে অহেতুক কুৎসা রটাতে লাগল। এমনও হয়েছে যে তার স্বামীকে ভুল বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলেছে। তিনি ভেবেছিলেন হয়তো একটু মানিয়ে চললে সবাই ভালোবাসবে, তবে সময়ের সঙ্গে বুঝলেন এই আশা বৃথা। তাই তিনি নিজের মতো চলার সিদ্ধান্ত নিলেন, সমালোচনাগুলোকে পাত্তা না দিয়ে। ধীরে ধীরে তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। তিনি নিজেকে আত্মনির্ভর করে তোলেন। কাজ শুরু করেন এবং নিজের অর্থ উপার্জন শুরু করেন। কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাস আর সাহস নিয়ে নিজের মতো করে জীবন গড়তে থাকেন। তখনই শুরু হয় সম্পর্কের বদল। যারা একসময় তাকে "চটপটে" বলে বিদ্রূপ করত, তারা এখন তাকে খুশি করতে ব্যস্ত। তার রান্না একসময় নাক সিটকিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হতো, এখন তারই হাতের রান্না খেতে তাদের আগ্রহ ধরে না। যারা ফোন ব্যবহারের জন্য তিরস্কার করত, তারা এখন তার ফোন নিয়ে থাকা দেখে কিছু বলে না। এই পরিবর্তন দেখে তিনি বুঝলেন যে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার গুরুত্ব কতখানি। নিজের উপার্জন তাকে শুধু সম্মানই এনে দেয়নি, বরং তার কথাকে মূল্য দিতেও বাধ্য করেছে। এই ক'বছরের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি উপলব্ধি করলেন—অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন না হলে সমাজের সম্মান পাওয়া কঠিন। পরিবারে যারা একসময় তাকে বোঝা মনে করত, তারা এখন তাকে মাথায় করে রাখে, শুধু তার উপার্জনের জন্যই। তিনি এখন বিশ্বাস করেন, "মানি ইজ সেকেন্ড গড"—অর্থের কারণে তাকে সম্মান দেওয়া হচ্ছে, যদিও ভালোবাসা নয়। তবু আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠার গুরুত্ব তাকে জীবনের কঠিন সত্য শিখিয়েছে। #story
    0 Comments 0 Shares 202 Views 0 Reviews
  • তালা উপজেলার নিম্নাঞ্চল একের পর এক বন্যায় তলিয়ে গেছে। মৌসুমি বন্যার পর এবার ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র কারণে টানা বৃষ্টিপাতে আবারও এই অঞ্চলের খলিশখালী ইউনিয়নসহ কয়েকটি ইউনিয়ন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুই মাস আগে বেতনার বাঁধ ভেঙে ও আকাশ বন্যার ফলে তালা উপজেলায় পানির উচ্চতা বাড়তে থাকে। কিছুদিন পানি শুকালেও তা ফের বাড়তে থাকে, এবং সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড়ের বৃষ্টিতে এ অঞ্চল আবারও প্লাবিত হয়েছে।

    প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কৃষি ও মৎস্য খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খলিশখালী ইউনিয়নের মৎস্য ঘের, আউশ ধান ক্ষেত, এবং সবজির ক্ষেত তলিয়ে গিয়ে প্রায় সব ফসলই নষ্ট হয়েছে। এতে মৎস্য খাতের মালিকদের কয়েক শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সবজি ও চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। এই অঞ্চলে আউশ ধানের ক্ষতি হয়ে গেছে, এবং বোরো ধানেরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, ফলে সামনের খাদ্য সংকটের আশঙ্কা বেড়ে গেছে।

    এ ছাড়া প্রায় ১ থেকে ২ হাজার মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মালিকদের ধারণা। পাশাপাশি ৩-৪টি ইউনিয়নের শতাধিক পোল্ট্রি খামার পানিতে তলিয়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ধর্মীয় উপাসনালয়, স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এলাকার শিক্ষা কার্যক্রম ও অন্যান্য সামাজিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

    এলাকাজুড়ে স্বাস্থ্য সংকটও বেড়েছে। বিশুদ্ধ পানির অভাবের পাশাপাশি চর্মরোগ, পানিবাহিত রোগ, ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েছে। বন্যার কারণে এলাকার কাঁচা ও আধা পাকা রাস্তা, এমনকি কিছু পিচের রাস্তা পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে। ফলে এলাকার সাধারণ মানুষের চলাচলে ও দৈনন্দিন জীবনে চরম সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষি ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষক ও দিনমজুররা খাদ্য সংকটের আশঙ্কায় আছেন এবং জীবিকা হারিয়ে অতিকষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।
    তালা উপজেলার নিম্নাঞ্চল একের পর এক বন্যায় তলিয়ে গেছে। মৌসুমি বন্যার পর এবার ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র কারণে টানা বৃষ্টিপাতে আবারও এই অঞ্চলের খলিশখালী ইউনিয়নসহ কয়েকটি ইউনিয়ন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুই মাস আগে বেতনার বাঁধ ভেঙে ও আকাশ বন্যার ফলে তালা উপজেলায় পানির উচ্চতা বাড়তে থাকে। কিছুদিন পানি শুকালেও তা ফের বাড়তে থাকে, এবং সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড়ের বৃষ্টিতে এ অঞ্চল আবারও প্লাবিত হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কৃষি ও মৎস্য খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খলিশখালী ইউনিয়নের মৎস্য ঘের, আউশ ধান ক্ষেত, এবং সবজির ক্ষেত তলিয়ে গিয়ে প্রায় সব ফসলই নষ্ট হয়েছে। এতে মৎস্য খাতের মালিকদের কয়েক শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সবজি ও চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। এই অঞ্চলে আউশ ধানের ক্ষতি হয়ে গেছে, এবং বোরো ধানেরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, ফলে সামনের খাদ্য সংকটের আশঙ্কা বেড়ে গেছে। এ ছাড়া প্রায় ১ থেকে ২ হাজার মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মালিকদের ধারণা। পাশাপাশি ৩-৪টি ইউনিয়নের শতাধিক পোল্ট্রি খামার পানিতে তলিয়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ধর্মীয় উপাসনালয়, স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এলাকার শিক্ষা কার্যক্রম ও অন্যান্য সামাজিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এলাকাজুড়ে স্বাস্থ্য সংকটও বেড়েছে। বিশুদ্ধ পানির অভাবের পাশাপাশি চর্মরোগ, পানিবাহিত রোগ, ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েছে। বন্যার কারণে এলাকার কাঁচা ও আধা পাকা রাস্তা, এমনকি কিছু পিচের রাস্তা পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে। ফলে এলাকার সাধারণ মানুষের চলাচলে ও দৈনন্দিন জীবনে চরম সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষি ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষক ও দিনমজুররা খাদ্য সংকটের আশঙ্কায় আছেন এবং জীবিকা হারিয়ে অতিকষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।
    0 Comments 0 Shares 134 Views 0 Reviews
  • ক্ষিতিমোহন সেনের মতে, সাহিত্য সংগ্রহের পথিকৃৎ বাংলার মাটিতে, যেখানে প্রায় হাজার বছর আগে বৌদ্ধ পণ্ডিত বিদ্যাধর সংকলিত করেন শতাধিক কবির কবিতা নিয়ে "কবীন্দ্রবচনসমুচ্চয়"। পরবর্তীতে, শ্রীধরদাসের "সদুক্তিকর্ণামৃত" (১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) এবং ষোলো শতকে শ্রীরূপ গোস্বামীর "পদ্যাবলী"তে ভক্ত কবিদের রচনা সংগ্রহ করেন। এই ধারাবাহিকতায় ১৮৮৫ সালে রবীন্দ্রনাথ "পদরত্নাবলী" সম্পাদনা করেন। রবীন্দ্রনাথের মতে, বাংলা সাহিত্যে সংকলনের ধারা এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

    সম্প্রতি প্রকাশিত অরুণাভ সিংহের সম্পাদিত "দ্য পেঙ্গুইন বুক অব বেঙ্গলি শর্ট স্টোরিজ়" এই ঐতিহ্যেরই অংশ, যেখানে ৩৭টি গল্প বেছে নেওয়া হয়েছে প্রায় ১৩২ বছরের সময়কাল থেকে। বইটি শুরু হয়েছে রবীন্দ্রনাথের "ঘাটের কথা" দিয়ে, যা আধুনিক বাংলা ছোটগল্পের সূচনাপর্ব বলে মানা হয়। রবীন্দ্রনাথের এই গল্প বিধবা কুসুমের প্রেমকাহিনীকে কেন্দ্র করে রচিত, যা ১৮৮৪ সালে প্রকাশিত হয়। উনিশ শতকের সামাজিক পরিবর্তন এবং বিশ শতকে রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রভাব বইটির মূল উপজীব্য হয়ে উঠেছে।

    অরুণাভ সিংহের ভূমিকা থেকে জানা যায়, এই সংগ্রহে ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন, মার্ক্সবাদী সাহিত্য আন্দোলন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা এবং দেশভাগের পরবর্তী কালের গল্প স্থান পেয়েছে। বইটিতে পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কেও গল্প সংযোজন করা হয়েছে, যা এই সংগ্রহের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।

    বাংলা গল্পের নির্মাণশৈলী এবং ভঙ্গিমার নানা দিককেও এখানে আলোচিত হয়েছে। ষাটের দশকে সমাজের পরিবর্তনের সাথে সাথে লেখকরা তাদের গল্পের কাহিনি ও রীতিতেও পরিবর্তন আনেন। অরুণাভ সিংহ এই ভূমিকায় উল্লেখ করেন, কাহিনি শৈলীকে কেন্দ্র করে কথাসাহিত্য কীভাবে নতুন আঙ্গিকে বিকশিত হয়েছে, বিশেষ করে ষাট-সত্তরের দশকে নকশাল আন্দোলনের সময়কালে। গল্পগুলোতে সেই সময়ের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ছাপ স্পষ্ট, যা গল্পের ঘটনাবিন্যাস এবং চরিত্রগুলোতে ফুটে ওঠে।

    তবে, এই সংগ্রহের গল্পগুলো প্রধানত সম্পাদক অরুণাভ সিংহের ব্যক্তিগত পছন্দ থেকে নির্বাচিত, এবং তিনি কোন বিশেষ নীতির অনুসরণ করেননি বলে উল্লেখ করেছেন। বইটির সূচনা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ থেকে এবং সমাপ্তি সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্পে।

    গল্প সংকলনে শরৎচন্দ্র, বুদ্ধদেব বসু, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, মহাশ্বেতা দেবীর মতো পরিচিত লেখকদের জনপ্রিয় কিছু গল্প স্থান পেয়েছে, যা বাংলা গল্প সংগ্রহের ধারায় পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত কাহিনিগুলোকেই অনুসরণ করে। এ সংকলনে পুরনো ও নতুন গল্পের সংমিশ্রণ হলেও কিছু আধুনিক রচনার অভাব রয়েছে।

    সম্পাদনায় কিছু তথ্যে অসঙ্গতি লক্ষ করা যায়, যেমন বঙ্কিমচন্দ্রের "দুর্গেশনন্দিনী"কে প্রথম বাংলা উপন্যাস বলা হলেও প্যারীচাঁদ মিত্রের "আলালের ঘরের দুলাল"ই আদতে বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস হিসেবে গৃহীত। একইভাবে, রবীন্দ্রনাথের সৃষ্ট গানের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে, যা বাস্তবে সামান্য কম।

    বইটির প্রচ্ছদে বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়ের কোলাজ ব্যবহৃত হয়েছে যা একে দৃষ্টিনন্দন রূপ দিয়েছে। এই সংগ্রহটি বাঙালি ও অবাঙালি পাঠকদের জন্য বাংলা সাহিত্যের ঐতিহ্য ও পরিবর্তনের এক চমৎকার উপলব্ধি এনে দেয়। অরুণাভ সিংহের অনুবাদ দক্ষতা বইটির অন্যতম প্রভাবশালী দিক, যেখানে ৩৭টি গল্পের মধ্যে ৩২টি তার অনূদিত।
    #bookwormbangladesh
    ক্ষিতিমোহন সেনের মতে, সাহিত্য সংগ্রহের পথিকৃৎ বাংলার মাটিতে, যেখানে প্রায় হাজার বছর আগে বৌদ্ধ পণ্ডিত বিদ্যাধর সংকলিত করেন শতাধিক কবির কবিতা নিয়ে "কবীন্দ্রবচনসমুচ্চয়"। পরবর্তীতে, শ্রীধরদাসের "সদুক্তিকর্ণামৃত" (১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) এবং ষোলো শতকে শ্রীরূপ গোস্বামীর "পদ্যাবলী"তে ভক্ত কবিদের রচনা সংগ্রহ করেন। এই ধারাবাহিকতায় ১৮৮৫ সালে রবীন্দ্রনাথ "পদরত্নাবলী" সম্পাদনা করেন। রবীন্দ্রনাথের মতে, বাংলা সাহিত্যে সংকলনের ধারা এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য। সম্প্রতি প্রকাশিত অরুণাভ সিংহের সম্পাদিত "দ্য পেঙ্গুইন বুক অব বেঙ্গলি শর্ট স্টোরিজ়" এই ঐতিহ্যেরই অংশ, যেখানে ৩৭টি গল্প বেছে নেওয়া হয়েছে প্রায় ১৩২ বছরের সময়কাল থেকে। বইটি শুরু হয়েছে রবীন্দ্রনাথের "ঘাটের কথা" দিয়ে, যা আধুনিক বাংলা ছোটগল্পের সূচনাপর্ব বলে মানা হয়। রবীন্দ্রনাথের এই গল্প বিধবা কুসুমের প্রেমকাহিনীকে কেন্দ্র করে রচিত, যা ১৮৮৪ সালে প্রকাশিত হয়। উনিশ শতকের সামাজিক পরিবর্তন এবং বিশ শতকে রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রভাব বইটির মূল উপজীব্য হয়ে উঠেছে। অরুণাভ সিংহের ভূমিকা থেকে জানা যায়, এই সংগ্রহে ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন, মার্ক্সবাদী সাহিত্য আন্দোলন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা এবং দেশভাগের পরবর্তী কালের গল্প স্থান পেয়েছে। বইটিতে পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কেও গল্প সংযোজন করা হয়েছে, যা এই সংগ্রহের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। বাংলা গল্পের নির্মাণশৈলী এবং ভঙ্গিমার নানা দিককেও এখানে আলোচিত হয়েছে। ষাটের দশকে সমাজের পরিবর্তনের সাথে সাথে লেখকরা তাদের গল্পের কাহিনি ও রীতিতেও পরিবর্তন আনেন। অরুণাভ সিংহ এই ভূমিকায় উল্লেখ করেন, কাহিনি শৈলীকে কেন্দ্র করে কথাসাহিত্য কীভাবে নতুন আঙ্গিকে বিকশিত হয়েছে, বিশেষ করে ষাট-সত্তরের দশকে নকশাল আন্দোলনের সময়কালে। গল্পগুলোতে সেই সময়ের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ছাপ স্পষ্ট, যা গল্পের ঘটনাবিন্যাস এবং চরিত্রগুলোতে ফুটে ওঠে। তবে, এই সংগ্রহের গল্পগুলো প্রধানত সম্পাদক অরুণাভ সিংহের ব্যক্তিগত পছন্দ থেকে নির্বাচিত, এবং তিনি কোন বিশেষ নীতির অনুসরণ করেননি বলে উল্লেখ করেছেন। বইটির সূচনা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ থেকে এবং সমাপ্তি সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্পে। গল্প সংকলনে শরৎচন্দ্র, বুদ্ধদেব বসু, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, মহাশ্বেতা দেবীর মতো পরিচিত লেখকদের জনপ্রিয় কিছু গল্প স্থান পেয়েছে, যা বাংলা গল্প সংগ্রহের ধারায় পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত কাহিনিগুলোকেই অনুসরণ করে। এ সংকলনে পুরনো ও নতুন গল্পের সংমিশ্রণ হলেও কিছু আধুনিক রচনার অভাব রয়েছে। সম্পাদনায় কিছু তথ্যে অসঙ্গতি লক্ষ করা যায়, যেমন বঙ্কিমচন্দ্রের "দুর্গেশনন্দিনী"কে প্রথম বাংলা উপন্যাস বলা হলেও প্যারীচাঁদ মিত্রের "আলালের ঘরের দুলাল"ই আদতে বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস হিসেবে গৃহীত। একইভাবে, রবীন্দ্রনাথের সৃষ্ট গানের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে, যা বাস্তবে সামান্য কম। বইটির প্রচ্ছদে বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়ের কোলাজ ব্যবহৃত হয়েছে যা একে দৃষ্টিনন্দন রূপ দিয়েছে। এই সংগ্রহটি বাঙালি ও অবাঙালি পাঠকদের জন্য বাংলা সাহিত্যের ঐতিহ্য ও পরিবর্তনের এক চমৎকার উপলব্ধি এনে দেয়। অরুণাভ সিংহের অনুবাদ দক্ষতা বইটির অন্যতম প্রভাবশালী দিক, যেখানে ৩৭টি গল্পের মধ্যে ৩২টি তার অনূদিত। #bookwormbangladesh
    0 Comments 0 Shares 377 Views 0 Reviews
  • কেন বই পড়বেন!!
    বই পড়া ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার আগে মানুষ সময় কাটানোর অন্যতম প্রধান মাধ্যম ছিল, এবং তখন অনেকেরই বই পড়ার নিয়মিত অভ্যাস ছিল। কিন্তু বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তির কারণে বই পড়ার অভ্যাস ক্রমেই কমে যাচ্ছে। অথচ, বই পড়ার অনেক উপকারিতা আছে যা যেকোনো মানুষকে বইয়ের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে পারে।

    প্রথমত, **বই পড়া মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।** গবেষণা বলছে, বই পড়ার অভ্যাস আলঝাইমার ও ডিমেনশিয়ার মতো মানসিক রোগের গতি ধীর করে, কারণ এটি মস্তিষ্ককে সক্রিয় ও উদ্দীপিত রাখে। ঠিক যেমন শরীরকে সুস্থ রাখতে ব্যায়াম দরকার, তেমনি মস্তিষ্ককেও স্বাস্থ্যকর রাখতে বই পড়া অত্যন্ত কার্যকর।

    দ্বিতীয়ত, **বই পড়া চাপ কমাতে সহায়তা করে।** আমাদের প্রতিদিনের জীবনে মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে, এবং বই পড়ার মাধ্যমে তা অনেকাংশে দূর করা সম্ভব। একটি আকর্ষণীয় গল্প বা উপন্যাস পড়ার সময় আমরা বাস্তব জীবনের চিন্তাভাবনা থেকে সাময়িক মুক্তি পাই, যা মস্তিষ্ককে শান্ত করে এবং চাপ কমাতে সহায়তা করে।

    তৃতীয়ত, **বই পড়া শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধি করে।** নিয়মিত বই পড়ার মাধ্যমে নতুন শব্দ শেখা যায় যা ভাষার দক্ষতা বাড়ায় ও আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়া, এটি নতুন ভাষা শিখতেও সহায়তা করে যা যোগাযোগের দক্ষতা উন্নত করে।

    চতুর্থত, **বই পড়া স্মৃতিশক্তি উন্নত করে।** গল্পের চরিত্র, ঘটনার ক্রম এগুলো মনে রাখতে গিয়ে মস্তিষ্ক স্মৃতিশক্তি অনুশীলন করে। ফলে, নিয়মিত পড়া স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে এবং মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখে।

    পঞ্চমত, **বই পড়া চিন্তার দক্ষতা বাড়ায়।** রহস্য উপন্যাস পড়ার সময় আমরা ভবিষ্যদ্বাণী বা অনুমান করতে বাধ্য হই, যা চিন্তাশক্তি বিকাশে সাহায্য করে। চিন্তাশক্তি উন্নত হলে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান সহজ হয় এবং পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

    ছয় নম্বরে, **বই পড়া লেখার দক্ষতা বাড়ায়।** নিয়মিত পড়ার অভ্যাসে শব্দভাণ্ডার ও কল্পনাশক্তি উন্নত হয়, যা একজন পাঠককে ভালো লেখক হয়ে উঠতে সহায়তা করে। এই দক্ষতা শুধু সাহিত্যের ক্ষেত্রেই নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনেও কাজে আসে।

    এছাড়া, **বই পড়া প্রশান্তি দেয়।** ভ্রমণ ব্যয়বহুল হতে পারে, কিন্তু একটি ভালো বই পড়লে তেমনি প্রশান্তি পাওয়া সম্ভব। উদ্বেগ ও উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যায় ভোগা মানুষের জন্যও এটি স্বস্তির একটি উপায় হতে পারে।

    অবশেষে, **বই পড়া বিনোদনের মাধ্যমও বটে।** আমরা বিনোদনের জন্য সিনেমা বা গান দেখতে টাকা খরচ করি, অথচ বই পড়া অনেক সস্তা এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনোদন দেয়। আমাদের চারপাশে থাকা লাইব্রেরি বা অনলাইন ই-বুক প্ল্যাটফর্ম থেকে সহজেই বই সংগ্রহ করা যায়।

    এই সব সুবিধা নিয়মিত বই পড়ার প্রতি আমাদের আগ্রহ বাড়ায়। স্বাস্থ্যগত সুবিধা থেকে স্মার্টনেস পর্যন্ত বই পড়ার অসংখ্য সুফল রয়েছে, এবং এটি একবার অভ্যাসে পরিণত হলে বই পড়ার অভ্যাস বজায় রাখা সহজ হয়ে যায়।
    #bookwormbangladesh
    কেন বই পড়বেন!! বই পড়া ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার আগে মানুষ সময় কাটানোর অন্যতম প্রধান মাধ্যম ছিল, এবং তখন অনেকেরই বই পড়ার নিয়মিত অভ্যাস ছিল। কিন্তু বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তির কারণে বই পড়ার অভ্যাস ক্রমেই কমে যাচ্ছে। অথচ, বই পড়ার অনেক উপকারিতা আছে যা যেকোনো মানুষকে বইয়ের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে পারে। প্রথমত, **বই পড়া মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।** গবেষণা বলছে, বই পড়ার অভ্যাস আলঝাইমার ও ডিমেনশিয়ার মতো মানসিক রোগের গতি ধীর করে, কারণ এটি মস্তিষ্ককে সক্রিয় ও উদ্দীপিত রাখে। ঠিক যেমন শরীরকে সুস্থ রাখতে ব্যায়াম দরকার, তেমনি মস্তিষ্ককেও স্বাস্থ্যকর রাখতে বই পড়া অত্যন্ত কার্যকর। দ্বিতীয়ত, **বই পড়া চাপ কমাতে সহায়তা করে।** আমাদের প্রতিদিনের জীবনে মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে, এবং বই পড়ার মাধ্যমে তা অনেকাংশে দূর করা সম্ভব। একটি আকর্ষণীয় গল্প বা উপন্যাস পড়ার সময় আমরা বাস্তব জীবনের চিন্তাভাবনা থেকে সাময়িক মুক্তি পাই, যা মস্তিষ্ককে শান্ত করে এবং চাপ কমাতে সহায়তা করে। তৃতীয়ত, **বই পড়া শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধি করে।** নিয়মিত বই পড়ার মাধ্যমে নতুন শব্দ শেখা যায় যা ভাষার দক্ষতা বাড়ায় ও আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়া, এটি নতুন ভাষা শিখতেও সহায়তা করে যা যোগাযোগের দক্ষতা উন্নত করে। চতুর্থত, **বই পড়া স্মৃতিশক্তি উন্নত করে।** গল্পের চরিত্র, ঘটনার ক্রম এগুলো মনে রাখতে গিয়ে মস্তিষ্ক স্মৃতিশক্তি অনুশীলন করে। ফলে, নিয়মিত পড়া স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে এবং মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখে। পঞ্চমত, **বই পড়া চিন্তার দক্ষতা বাড়ায়।** রহস্য উপন্যাস পড়ার সময় আমরা ভবিষ্যদ্বাণী বা অনুমান করতে বাধ্য হই, যা চিন্তাশক্তি বিকাশে সাহায্য করে। চিন্তাশক্তি উন্নত হলে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান সহজ হয় এবং পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। ছয় নম্বরে, **বই পড়া লেখার দক্ষতা বাড়ায়।** নিয়মিত পড়ার অভ্যাসে শব্দভাণ্ডার ও কল্পনাশক্তি উন্নত হয়, যা একজন পাঠককে ভালো লেখক হয়ে উঠতে সহায়তা করে। এই দক্ষতা শুধু সাহিত্যের ক্ষেত্রেই নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনেও কাজে আসে। এছাড়া, **বই পড়া প্রশান্তি দেয়।** ভ্রমণ ব্যয়বহুল হতে পারে, কিন্তু একটি ভালো বই পড়লে তেমনি প্রশান্তি পাওয়া সম্ভব। উদ্বেগ ও উচ্চ রক্তচাপের মতো সমস্যায় ভোগা মানুষের জন্যও এটি স্বস্তির একটি উপায় হতে পারে। অবশেষে, **বই পড়া বিনোদনের মাধ্যমও বটে।** আমরা বিনোদনের জন্য সিনেমা বা গান দেখতে টাকা খরচ করি, অথচ বই পড়া অনেক সস্তা এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনোদন দেয়। আমাদের চারপাশে থাকা লাইব্রেরি বা অনলাইন ই-বুক প্ল্যাটফর্ম থেকে সহজেই বই সংগ্রহ করা যায়। এই সব সুবিধা নিয়মিত বই পড়ার প্রতি আমাদের আগ্রহ বাড়ায়। স্বাস্থ্যগত সুবিধা থেকে স্মার্টনেস পর্যন্ত বই পড়ার অসংখ্য সুফল রয়েছে, এবং এটি একবার অভ্যাসে পরিণত হলে বই পড়ার অভ্যাস বজায় রাখা সহজ হয়ে যায়। #bookwormbangladesh
    0 Comments 0 Shares 459 Views 0 Reviews
  • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের একটি অনন্য দিক, যিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট হিসেবে অসামান্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। ১৯৩৪ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর মাদারীপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি এবং মাত্র চার বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে কলকাতায় চলে আসেন। তাঁর সাহিত্য জীবন শুরু হয় ১৯৫৩ সালে কৃত্তিবাস পত্রিকার সম্পাদনার মাধ্যমে, যেখানে তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার একটি নতুন ধারার সূচনা করেন।

    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একা এবং কয়েকজন’ ১৯৫৮ সালে প্রকাশিত হয়, যা পাঠকদের মধ্যে আধুনিকতা ও রোমান্টিকতার এক অনন্য মেলবন্ধন তুলে ধরেছিল। তাঁর উল্লেখযোগ্য কবিতার বইগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘আমি কী রকম ভাবে বেঁচে আছি’, ‘যুগলবন্দী’, ‘হঠাৎ নীরার জন্য’, এবং ‘রাত্রির রঁদেভূ’।

    তিনি শিশু সাহিত্যে 'কাকাবাবু-সন্তু' সিরিজের মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন, যা এখনো নতুন প্রজন্মের কাছে সমাদৃত। তাঁর উপন্যাস 'অরণ্যের দিনরাত্রি' এবং 'প্রতিদ্বন্দ্বী' চলচ্চিত্রে সত্যজিৎ রায়ের নির্মাণের মাধ্যমে বাংলা সিনেমার ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। এছাড়া, ভ্রমণকাহিনী ‘ছবির দেশে কবিতার দেশে’ এবং আত্মজীবনীমূলক ‘অর্ধেক জীবন বই’তে তিনি নিজের জীবন ও অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন।

    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ২০১২ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যে জীবানন্দ পরবর্তী যুগের অন্যতম প্রধান কবি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর লেখায় যেমন সাহিত্যের গভীরতা রয়েছে, তেমনই সমাজ, প্রেম, প্রকৃতি এবং মানবিক সম্পর্কের একটি স্পষ্ট চিত্রও পাওয়া যায়। ৪০ বছরের সাহিত্যিক ক্যারিয়ারে তিনি বাংলা সাহিত্যের একটি বিশাল দিগন্ত খুলে দিয়েছিলেন, যা বর্তমান ও ভবিষ্যতের পাঠকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
    #bookworm_bangladesh
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের একটি অনন্য দিক, যিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট হিসেবে অসামান্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। ১৯৩৪ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর মাদারীপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি এবং মাত্র চার বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে কলকাতায় চলে আসেন। তাঁর সাহিত্য জীবন শুরু হয় ১৯৫৩ সালে কৃত্তিবাস পত্রিকার সম্পাদনার মাধ্যমে, যেখানে তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার একটি নতুন ধারার সূচনা করেন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একা এবং কয়েকজন’ ১৯৫৮ সালে প্রকাশিত হয়, যা পাঠকদের মধ্যে আধুনিকতা ও রোমান্টিকতার এক অনন্য মেলবন্ধন তুলে ধরেছিল। তাঁর উল্লেখযোগ্য কবিতার বইগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘আমি কী রকম ভাবে বেঁচে আছি’, ‘যুগলবন্দী’, ‘হঠাৎ নীরার জন্য’, এবং ‘রাত্রির রঁদেভূ’। তিনি শিশু সাহিত্যে 'কাকাবাবু-সন্তু' সিরিজের মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন, যা এখনো নতুন প্রজন্মের কাছে সমাদৃত। তাঁর উপন্যাস 'অরণ্যের দিনরাত্রি' এবং 'প্রতিদ্বন্দ্বী' চলচ্চিত্রে সত্যজিৎ রায়ের নির্মাণের মাধ্যমে বাংলা সিনেমার ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। এছাড়া, ভ্রমণকাহিনী ‘ছবির দেশে কবিতার দেশে’ এবং আত্মজীবনীমূলক ‘অর্ধেক জীবন বই’তে তিনি নিজের জীবন ও অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ২০১২ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যে জীবানন্দ পরবর্তী যুগের অন্যতম প্রধান কবি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর লেখায় যেমন সাহিত্যের গভীরতা রয়েছে, তেমনই সমাজ, প্রেম, প্রকৃতি এবং মানবিক সম্পর্কের একটি স্পষ্ট চিত্রও পাওয়া যায়। ৪০ বছরের সাহিত্যিক ক্যারিয়ারে তিনি বাংলা সাহিত্যের একটি বিশাল দিগন্ত খুলে দিয়েছিলেন, যা বর্তমান ও ভবিষ্যতের পাঠকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। #bookworm_bangladesh
    0 Comments 0 Shares 298 Views 0 Reviews
  • চিঠি লেখা এবং ডায়েরি লেখার অভ্যাসগুলো আমাদের জীবনের একসময়কার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল, যা আজ প্রযুক্তির আধুনিকতার ভিড়ে হারিয়ে গেছে। একসময় চিঠি লেখা ছিল আর্টের মতো; সম্পর্কের আন্তরিকতার প্রতীক। কিন্তু এখন, যান্ত্রিকতার যুগে, আমরা মোবাইল স্ক্রিনের প্রতি এতটাই নির্ভরশীল হয়ে গেছি যে হাতে কাগজ-কলমে কিছু লেখার সময় ও আগ্রহ দুটোই কমে গেছে। বই পড়া, বই কেনা, এবং কাগজে লেখার আনন্দের সাথে একটা আবেগ জড়িয়ে আছে যা স্ক্রিনে পড়ার সময়ে পাওয়া যায় না।

    আজও যদি লেখার অভ্যাসটা গড়ে তোলা যায়, তবে এটি মানসিক শান্তি ও ব্যক্তিগত উন্নতির দিকে এক অসাধারণ পথ হয়ে উঠতে পারে। লেখার মাধ্যমে আমরা নিজের চিন্তাধারাকে গুছিয়ে তুলতে পারি, অনুভূতিগুলো প্রকাশের সুযোগ পাই। এমনকি, শুধু আত্মবিশ্বাস নয়, লেখার মাধ্যমে আমাদের চরিত্রেও গঠনমূলক পরিবর্তন আনা সম্ভব। বেকন বলেছেন, “রিডিং মেকেথ অ্যা ফুল ম্যান, কনফারেন্স অ্যা রেডি ম্যান, অ্যান্ড রাইটিং অ্যান এগ্‌জ্যাক্ট ম্যান।” তাই লেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, হয়তো ছোটখাটো ডায়েরি লেখার মাধ্যমে।

    লেখালেখির প্রাথমিক পর্যায়ে চার লাইন দিয়ে শুরু করা যেতেই পারে। ধীরে ধীরে সেই চার লাইন কবে গড়ে উঠবে এক পৃষ্ঠায়, তা আমরা নিজেরাই টের পাবো। ডায়েরির পাতায় পুরোনো স্মৃতির পাতা উল্টানোর অনুভূতিটা অন্য রকম। আমরা বেড়াতে যাই, ছবি তুলি, সেটা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করি। সেগুলো কাগজে লিখে রাখলে একসময় পুরনো স্মৃতির পাতায় ডুব দিয়ে ফিরে দেখা যাবে জীবনের অজস্র আনন্দঘন মুহূর্ত।

    তাই, আমাদের উচিত সেই পুরোনো ভালো অভ্যাসগুলোর কিছুটা হলেও ফিরিয়ে আনা—বই পড়া, কাগজে লেখা, স্মৃতির জন্য কিছু রেখে যাওয়া। নিজের অনুভূতি, অভিজ্ঞতা, এবং স্বপ্নগুলোকে লিখে রাখুন। দেখতে পাবেন, চিন্তার জগতে নতুন স্তরের আনাগোনা শুরু হবে।#bookworm_bangladesh
    চিঠি লেখা এবং ডায়েরি লেখার অভ্যাসগুলো আমাদের জীবনের একসময়কার গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল, যা আজ প্রযুক্তির আধুনিকতার ভিড়ে হারিয়ে গেছে। একসময় চিঠি লেখা ছিল আর্টের মতো; সম্পর্কের আন্তরিকতার প্রতীক। কিন্তু এখন, যান্ত্রিকতার যুগে, আমরা মোবাইল স্ক্রিনের প্রতি এতটাই নির্ভরশীল হয়ে গেছি যে হাতে কাগজ-কলমে কিছু লেখার সময় ও আগ্রহ দুটোই কমে গেছে। বই পড়া, বই কেনা, এবং কাগজে লেখার আনন্দের সাথে একটা আবেগ জড়িয়ে আছে যা স্ক্রিনে পড়ার সময়ে পাওয়া যায় না। আজও যদি লেখার অভ্যাসটা গড়ে তোলা যায়, তবে এটি মানসিক শান্তি ও ব্যক্তিগত উন্নতির দিকে এক অসাধারণ পথ হয়ে উঠতে পারে। লেখার মাধ্যমে আমরা নিজের চিন্তাধারাকে গুছিয়ে তুলতে পারি, অনুভূতিগুলো প্রকাশের সুযোগ পাই। এমনকি, শুধু আত্মবিশ্বাস নয়, লেখার মাধ্যমে আমাদের চরিত্রেও গঠনমূলক পরিবর্তন আনা সম্ভব। বেকন বলেছেন, “রিডিং মেকেথ অ্যা ফুল ম্যান, কনফারেন্স অ্যা রেডি ম্যান, অ্যান্ড রাইটিং অ্যান এগ্‌জ্যাক্ট ম্যান।” তাই লেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, হয়তো ছোটখাটো ডায়েরি লেখার মাধ্যমে। লেখালেখির প্রাথমিক পর্যায়ে চার লাইন দিয়ে শুরু করা যেতেই পারে। ধীরে ধীরে সেই চার লাইন কবে গড়ে উঠবে এক পৃষ্ঠায়, তা আমরা নিজেরাই টের পাবো। ডায়েরির পাতায় পুরোনো স্মৃতির পাতা উল্টানোর অনুভূতিটা অন্য রকম। আমরা বেড়াতে যাই, ছবি তুলি, সেটা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করি। সেগুলো কাগজে লিখে রাখলে একসময় পুরনো স্মৃতির পাতায় ডুব দিয়ে ফিরে দেখা যাবে জীবনের অজস্র আনন্দঘন মুহূর্ত। তাই, আমাদের উচিত সেই পুরোনো ভালো অভ্যাসগুলোর কিছুটা হলেও ফিরিয়ে আনা—বই পড়া, কাগজে লেখা, স্মৃতির জন্য কিছু রেখে যাওয়া। নিজের অনুভূতি, অভিজ্ঞতা, এবং স্বপ্নগুলোকে লিখে রাখুন। দেখতে পাবেন, চিন্তার জগতে নতুন স্তরের আনাগোনা শুরু হবে।#bookworm_bangladesh
    0 Comments 0 Shares 302 Views 0 Reviews
More Results