বাঙ্গলাদেশের ভোটে কবিদের অংশ গ্রহন, ও রাজনীতির হিসাব।
ভোট একটি মহৎ কাজ, একটি দেশের ভবিষ্যত্তা নির্ধারণ হয়।
বাংলাদেশে ভোটের দিনগুলি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। এটি একটি দেশবাসীর জীবনের অপূর্ব অংশ, যা তাদের দায়িত্ব এবং অধিকারের প্রতি একটি অসীম এক সুযোগ প্রদান করে। ভোটের দিনে আমাদের দেশের লোকেরা তাদের পছন্দের নেতা বা দলকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ভাবনা এবং আশা যোগ করে।
এটি একটি জনগণের স্বাধীনতা অর্জনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ যাত্রা, একটি প্রতিরোধ ও একটি পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি করে। ভোটের সময় প্রতিটি ভোটের মূল্য অনেক।
প্রত্যেকেই নিজ এলাকার উন্নতি এবং উন্নতির দিকে একটি সামর্থ্যশালী দল বা ব্যক্তিকে ভোট দিতে চায়।
এটি না কেবল একটি অধিকার, বরং একটি দায়িত্ব এবং দেশপ্রেমের প্রতি একটি প্রতিশ্রুতি।
১৯২৬ সালে দ্রোহ ও প্রেমের কবি কাজী নজরুল ইসলাম ভোট করেছিলেন।
নজরুলের আসন ছিল ফরিদপুর,তখন ঢাকার সঙ্গেই সম্পৃক্ত ছিল ফরিদপুর। কবি ঘুরে বেড়াতেন বাংলার আনাচে-কানাচে। তিনি ফরিদপুর ঘুরতে যাওয়ার পর স্থানীয়রা তাকে ভোটে দাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান। সে অনুরোধ তিনি প্রত্যাখ্যান করলেন না। মানুষের ডাকে সাড়া দিলেন।
ঢাকা বিভাগের মুসলমানদের কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য পদে তিনি ভোটে নামলেন।
মনোনয়ন নিলেন স্বরাজ পার্টি থেকে। প্রতিক নেওয়ার পর দল থেকে তাকে খরচের ৩০০ টাকা দেওয়া হয়। কবির ধারনা ছিল ভোটে টাকা লাগে না।
বিষ্মিত হাতে তিনি টাকা নিয়েছিলেন।মাঠে নেমে বুঝলেন এ টাকা কিছুই না। পোস্টার করলে কর্মী খরচ থাকে না। কর্মীদের দিলে সমর্থকরা পান তামাকের টাকা চান।
বিপদে পরলেন বিদ্রোহী কবি, বুঝলেন প্রচার হয় না টাকা ছাড়া।কবি কিছু প্রভাবশালী মানুষের কাছেও গেলেন। কাজ হলো না।কবির পাশে দাঁড়ালেন না কেউ, পেলেন না কোনো ধরনের সহায়তা।
বিপদ থেকে উদ্ধার করতে কবির পাশে দাঁড়ালেন ফরিদপুরের আরেকজন কবি জসীমউদ্দীন। এতে সমর্থন বাড়লেও আর্থিক সংকটের সমাধান হলো না। কবি নজরুল ভোটে হারলেন। জামানত বাজেয়াপ্ত হলো। পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে তিনি হলেন চতুর্থ।
সব মিলিয়ে ভোট পেলন ১ হাজার ৬২, ভোটে কবি নজরুলের অনেক অভিঞ্জতা হলো। বদলে যেতে দেখলেন দুইদিন আগের শুভানুধ্যায়ীদের।
১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের পতন হয়। তিন জোটের আন্দোলনের মুখে নিজেকে রক্ষা করতে পারলেন না এই সামরিক শাসক। জোটের রুপরেখা অনুযায়ী ক্ষমতা নেন বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের তত্বাবধায়ক সরকার। শুরু হয় নির্বাচনি প্রক্রিয়া।
কবি নির্মলেন্দু গুণ ছিলেন সাপ্তাহিক ঢাকা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক। নির্মলেন্দু গুন ভোটে দাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইলেন কিন্তু পেলেন না।
জেদি কবি সিদ্ধান্ত নিলেন ভোট থেকে সরবেন না। স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন। বিজয় নিয়ে তিনি খুব আশাবাদী। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে তিনি গেলেন নেত্রকোনায়। এলাকায় টানা অবস্থান করলেন।বাড়ি বাড়ি গেলেন।
তাঁর মার্কা ছিল কুমির।কুমির নিয়ে কিছুদিন মাঠে থাকলেন কথা সাহিত্যিক হৃমায়ূন আহমেদ।শেষ পর্যন্ত ভোটের নদীতে নৌকার সঙ্গে কুমির পারল না।
পরাজিত হলেন আমাদের অন্যতম প্রিয় কবি নির্মলেন্দু গুণ। তিনি পেলেন মাত্র ১ হাজার ২৪৯ ভোট। তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হলো।
ভোটের হিসাব আসলেই জটিল। এ জটিল হিসাবের ফাঁদে পড়ে কবি নজরুল, নির্মলেন্দু গুণদের সর্বনাশ হয়। ভোটাররা যোগ্য প্রার্থীর পাশে থাকে না।
আবার বলা যায় এটাই ভোটের সৌন্দর্য।যারা অজুহাত তুলে এ সুন্দরের সঙ্গে তালে তাল মেলাতে না পারেন, তারা ছিটকে পরেন রাজনীতি থেকে।রাজনীতির হিসাবটাই কঠিন।
সুত্র: সম্পাদক নঈম নিজামের কলাম, বাংলাদেশ প্রতিদিন -২৪ ডিসেম্বর ২৩।
- Book Reviews & Literary Discussions
- Writing
- Reading List
- Arts and Entertainment
- Personal Development
- Storytelling
- Startup
- Books
- Arts & Crafts
- Dance
- Drinks
- Entertainment & Pop Culture
- Health & Fitness
- Education & Learning
- Food & Cooking
- Games
- Gardening
- Self-Care & Mental Health
- Home Decor & DIY
- Literature
- Music
- Networking
- Other
- Party
- Philosophy and Religion
- Place
- Shopping
- Relationships & Dating
- Sports
- Theater
- lifestyles & hobbies/shutterbugs
- Lifelong Learning
- Tutorial
- Announcement
- Inspirational Stories & Motivation