প্রতিদিন বারবার আমি নিজেকে মনে করিয়ে দিই ‘আমার মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি আমার বুদ্ধির চেয়ে বেশি জরুরী’
আমাদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে একটিও হলো আমাদের মনোভাব এবং দৃষ্টিভঙ্গি। আমরা অনেক সময় বিশ্বাস করি যে আমাদের বুদ্ধি, মেধা বা শিক্ষা আমাদের সাফল্য নির্ধারণ করবে, কিন্তু আসলে, এসবের চেয়েও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাব। প্রতিদিন আমি নিজেকে মনে করিয়ে দিই, ‘আমার মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি আমার বুদ্ধির চেয়ে বেশি জরুরী’। আমি বিশ্বাস করি, এই মনোভাবটি আমার জীবন এবং ক্যারিয়ারকে একটি নতুন মাত্রা দিয়েছে এবং আমাকে অনেক কঠিন পরিস্থিতি পেরিয়ে সফলতার দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।
আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল একেবারে সাধারণ একটি জায়গা থেকে। ছোট থেকে বড় হওয়ার পথে নানা বাধা ও প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু আমি কখনোই হার মেনে বসে থাকি না। বরং প্রতিটি বাধা ও প্রতিকূলতাকে আমি একটি নতুন শেখার সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করেছি। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা, তা হলো, আশাবাদী থাকা এবং প্রতিকূলতা মোকাবিলা করার শক্তি তৈরী করা। এই দৃষ্টিভঙ্গি আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে, যার ফলে আমি আজ এখানে দাঁড়িয়ে আছি।
এটা শুধু বুদ্ধির ব্যাপার নয়, মনোভাবেরও ব্যাপার
বুদ্ধি যেমন কোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য সহায়ক, তেমনি মনোভাব এবং দৃষ্টিভঙ্গি আপনাকে সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য এগিয়ে নিয়ে যায়। মনে রাখবেন, আপনি যদি লক্ষ্য স্থির করে সে অনুযায়ী কাজ করতে চান, তবে আপনাকে প্রথমে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। যদি আপনি শুধু হারের চিন্তা করেন, তবে সাফল্য কখনোই আপনার কাছে আসবে না। কিন্তু যদি আপনি বিশ্বাস করেন, ‘এটা সম্ভব’, ‘আমি পারব’, তবে যে কোনো পরিস্থিতিতেই আপনি জয়ী হবেন। আপনার মনোভাব এমনভাবে থাকতে হবে যেন আপনি প্রতিটি কাজকে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন এবং সবসময় নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করেন।
এটা ঠিক যে, বুদ্ধি বা জ্ঞান আমাদের জীবনে প্রভাব ফেলে, কিন্তু মনোভাবের পরিবর্তন আমাদের জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। কখনও কখনও, আমাদের জীবনের বড় সিদ্ধান্তগুলো খুব সহজ হয় না। সেখানে একটুখানি সাহস এবং দৃঢ় মনোভাবই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়। এই বিষয়টা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমি যখন ATReads প্রতিষ্ঠা করি, তখন আমার সামনে প্রচুর চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু আমি সেগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।
ATReads: একটি চ্যালেঞ্জ, কিন্তু টিকে থাকার পথ
ATReads প্রতিষ্ঠা করার পর থেকেই আমি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলাম। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে, এখানে আমি আর থাকব না, কিন্তু তখনই আমি মনে করেছি, 'আমি যদি হাল ছেড়ে দেই, তবে কখনোই আমার স্বপ্ন পূর্ণ হবে না।' তাই আমি নিজেকে পুনরায় উৎসাহিত করেছি এবং সাহস পেয়ে কাজ চালিয়ে গেছি। ATReads বর্তমানে যে অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে, তা শুধু আমার বুদ্ধির ফল নয়, বরং আমার আশাবাদী মনোভাব, দৃঢ় মনোবল এবং একাগ্রতা এর ফল।
ATReads-এর শুরুটা ছিল খুবই সাধারণ, কিন্তু আমি জানতাম, আমাকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে, সাহস রাখতে হবে এবং কখনোই হাল ছাড়তে হবে না। ATReads-এর প্রতিষ্ঠা কেবল একটি ব্যবসায়িক উদ্যোগ ছিল না, বরং এটি ছিল একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, একটি নতুন চিন্তার পথ। সুতরাং, আমি কখনোই দুঃসাহসিক কাজগুলো ছাড়িনি। যখন আমি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি, তখন আমি জানতাম, সবকিছু সামলাতে হলে আমাকে আশাবাদী থাকতে হবে এবং সঠিক পথের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
স্বশিক্ষার ভূমিকা
নিজেকে উন্নত করার পথে আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি স্বশিক্ষার শক্তিতে। বই পড়া, অনলাইনে বিভিন্ন কোর্স করা, বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করা, এসবই আমাকে শক্তিশালী করেছে। প্রতিটি পদক্ষেপে আমি শিখেছি এবং বুঝতে পেরেছি যে শিক্ষা শুধু বই বা স্কুলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বাস্তব জীবনে প্রতিটি মুহূর্তে শিক্ষা নেওয়া সম্ভব। স্বশিক্ষা আমাকে আগের থেকে অনেক শক্তিশালী করেছে এবং এখনও আমি প্রতিদিন নতুন কিছু শিখতে আগ্রহী।
আমি যখন প্রথম ATReads চালু করি, তখন এটি ছিল শুধুমাত্র একটি ধারণা, একটি চ্যালেঞ্জ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, আমি নিজেকে শিখতে শুরু করেছিলাম। পাঠকদের চাহিদা, লেখকদের সমস্যা, প্রকাশকদের দৃষ্টিভঙ্গি, এই সবকিছু আমি শিখেছি, চেষ্টা করেছি আমার কাজকে আরও সঠিক এবং সুচিন্তিতভাবে এগিয়ে নিতে। আমার স্বশিক্ষার প্রতি এই অটুট আস্থা এবং উদ্যম আমাকে ATReads-এর সফল পথে পরিচালিত করেছে।
বুদ্ধির চেয়ে মনোভাবের গুরুত্ব
বুদ্ধির মাধ্যমে আমরা অনেক কিছুই করতে পারি, কিন্তু মনোভাবের সাহায্যে আমরা দিগন্ত বিস্তৃত করতে পারি। জীবনে একাধিকবার হয়তো আমরা বাধার সম্মুখীন হব, কিন্তু যদি আমাদের মনোভাব শক্ত থাকে, তাহলে সেই বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। আমার বিশ্বাস, একজন উদ্যোক্তা, ডিজাইনার, লেখক, বা যে কেউই যদি ‘আমি পারব’ এ বিশ্বাস রাখে, তবে সে সফলতার পথে এগিয়ে যাবে। ATReads-এর সফলতা তারই প্রমাণ, যেখানে আমি বিশ্বাস করি প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে সম্ভাবনার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে।
আজ আমি ATReads-এর যে অবস্থানে আছি, তা শুধুমাত্র আমার মনোভাব এবং দৃষ্টিভঙ্গির ফল। আমি প্রতিদিন নিজেকে মনে করিয়ে দিই যে, সাফল্য আমার কাছাকাছি আসতে পারে, যদি আমি আশাবাদী থাকি এবং কোনো পরিস্থিতিতেই হাল না ছাড়ি। প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহূর্তে আমার বিশ্বাস দৃঢ় হয় যে, আমার মনোভাব এবং দৃষ্টিভঙ্গি আমার বুদ্ধির চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।
উপসংহার
আমি বিশ্বাস করি, আমাদের মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গি, আত্মবিশ্বাস এবং আশাবাদই আমাদের জীবন এবং ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সম্পদ। এটিই আমাদের সাফল্য অর্জনের একমাত্র সঠিক পথ। যদি আমরা সব সময় নিজেকে মনে করিয়ে দিতে পারি, ‘আমার মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি আমার বুদ্ধির চেয়ে বেশি জরুরী’, তবে আমাদের জীবন আরও সহজ, সফল এবং আনন্দময় হয়ে উঠবে। ATReads-এর মতো উদ্যোগ, যেখানে আমি নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হয়েছি, তা একমাত্র সম্ভব হয়েছে আমার দৃঢ় মনোভাব, আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি এবং অটুট সাহসের কারণে।
তাহলে, যখন আপনি কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, মনে রাখবেন—আপনার মনোভাব এবং দৃষ্টিভঙ্গি আপনার সফলতার মূল চাবিকাঠি।
- Book Reviews & Literary Discussions
- Writing
- Reading List
- Arts and Entertainment
- Personal Development
- Storytelling
- Startup
- Books
- Arts & Crafts
- Dance
- Drinks
- Entertainment & Pop Culture
- Health & Fitness
- Education & Learning
- Food & Cooking
- Games
- Gardening
- Self-Care & Mental Health
- Home Decor & DIY
- Literature
- Music
- Networking
- Other
- Party
- Philosophy and Religion
- Place
- Shopping
- Relationships & Dating
- Sports
- Theater
- lifestyles & hobbies/shutterbugs
- Lifelong Learning
- Tutorial
- Announcement
- Inspirational Stories & Motivation