যদি রাত পোহালে শোনা যেত লেখক কে?

5
7χλμ.

'যদি রাত পোহালে শোনা যেত' গানটি বাংলাদেশের সংগীত ইতিহাসে একটি অনন্য সৃষ্টি। গানটির গীতিকার হলেন হাসান মতিউর রহমান, এবং এটি সুর করেছেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রখ্যাত শিল্পী মলয় কুমার গাঙ্গুলী। গানটি প্রথমবার গেয়েছিলেন মলয় কুমার গাঙ্গুলী ও প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন

১৯৯০ সালে রচিত এই গানটি বাঙালির হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতীক। এর প্রতিটি শব্দে বঙ্গবন্ধুর অবিনশ্বর চেতনা, তাঁর আদর্শ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামের কথা গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়।


গানটির সৃষ্টি পটভূমি

গীতিকার হাসান মতিউর রহমান এক স্মৃতিচারণে বলেন, গানটি লেখার পেছনে রয়েছে এক আবেগঘন রজনী। তিনি তখন ঢাকার সিপাহীবাগে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। একদিন মলয় কুমার গাঙ্গুলী তাঁকে ফোনে জানান যে, বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে একটি গান রচনা করতে হবে। হাসান মতিউর রহমান গভীর রাতে লিখতে বসেন। প্রথমে তিনি গানের সূচনা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। কিন্তু রাত পোহাতে পোহাতে একটি ধারণা তাঁর মনে আসে—বঙ্গবন্ধু কখনো মরতে পারেন না; তিনি বেঁচে আছেন বাঙালির হৃদয়ে এবং ইতিহাসে।

এই ভাবনা থেকেই তিনি রচনা করেন গানটির প্রথম পঙক্তি:
"যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই/
যদি রাজপথে আবার মিছিল হতো বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই!"

লেখার সময় হাসান মতিউর রহমান আবেগে বারবার শিহরিত হন। বিশেষত গানের শেষ স্তবক, যেখানে তিনি বঙ্গবন্ধুর তুলনা এবং ইতিহাসে তাঁর মূল্যায়নের কথা উল্লেখ করেন:
"কে আছে বাঙালি তাঁর সমতুল্য/
ইতিহাস একদিন দেবে তাঁর মূল্য/
সত্যকে মিথ্যার আড়াল করে যায় কি রাখা কখনো তা।"


গানটির সুর ও পরিবেশনা

গীতিকারের আবেগময় রচনা নিয়ে তিনি পরদিন সকাল ১০টায় মলয় কুমার গাঙ্গুলীর বাসায় যান। প্রথমবার গানটি পড়ে শোনার পর মলয় কুমার গাঙ্গুলী হারমোনিয়াম নিয়ে বসে পড়েন। মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে তিনি গানটির সুর তৈরি করেন।

সুর করতে করতে গীতিকার, সুরকার, এবং মলয়ের স্ত্রী সবাই আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন। মলয় কুমার গাঙ্গুলী গানটি প্রথমবার ফ্রান্সের একটি অনুষ্ঠানে পরিবেশন করেন। পরে তিনি এটি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সামনেও পরিবেশন করেন। গানটি শুনে শেখ হাসিনাও আবেগে কেঁদে ফেলেন।


গানটির তাৎপর্য

'যদি রাত পোহালে শোনা যেত' গানটি কেবল একটি সংগীত নয়; এটি বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসা এবং তাঁর স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার এক চিরন্তন প্রচেষ্টা।

১. বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা:

গানটির প্রতিটি পঙক্তি বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। এতে কল্পনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে জীবিত রেখে জাতিকে নতুনভাবে অনুপ্রাণিত করার প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়।

২. জাতীয় চেতনা:

গানটি বাঙালির জাতীয় চেতনায় বঙ্গবন্ধুর অবদানকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এটি প্রমাণ করে যে, একটি নেতা তার জাতির হৃদয়ে চিরজীবী থাকতে পারেন।

৩. ইতিহাসের অংশ:

গানটি আজ বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অংশ। এটি শুধুমাত্র একটি সংগীত নয়; এটি বাঙালির সংগ্রাম ও বঙ্গবন্ধুর চেতনার প্রতি অর্ঘ্য।


ATReads-এ গানটি নিয়ে আলোচনা করুন

বইপ্রেমী ও লেখকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ATReads-এ এই গান এবং এর পটভূমি নিয়ে আপনার মতামত শেয়ার করতে পারেন।

বুক রিভিউ লিখুন:

গানটি এবং এর সৃষ্টির পেছনের গল্প নিয়ে একটি রিভিউ লিখুন। আপনার অভিজ্ঞতা এবং গানটি আপনার মনে যে আবেগ জাগিয়েছে, তা শেয়ার করুন।

গান প্রমোশন করুন:

'যদি রাত পোহালে শোনা যেত' গানটি নিয়ে পোস্ট করুন এবং এই গানটি সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের কাছে সচেতনতা তৈরি করুন।

আর্টিকেল লিখুন:

বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং এই গানের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে একটি নিবন্ধ লিখুন। এটিকে জাতীয় ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত করুন।

গল্প লিখুন:

বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে কল্পনা করে একটি আবেগঘন গল্প লিখুন। গানটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এমন একটি গল্প তৈরি করুন, যেখানে বঙ্গবন্ধুর চেতনা নতুন প্রজন্মকে মুক্তির পথ দেখায়।

রিডিং চ্যালেঞ্জ:

বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত বই পড়ার একটি রিডিং চ্যালেঞ্জ শুরু করুন। এতে জাতীয় ইতিহাসের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে।

রাইটিং চ্যালেঞ্জ:

'যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই' এই থিমে একটি রাইটিং চ্যালেঞ্জ শুরু করুন। এতে লেখকরা বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চেতনাকে নতুনভাবে তুলে ধরতে পারবেন।


উপসংহার

'যদি রাত পোহালে শোনা যেত' একটি কালজয়ী গান, যা বঙ্গবন্ধুর প্রতি বাঙালির শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসার প্রতীক। হাসান মতিউর রহমানের অসাধারণ রচনা এবং মলয় কুমার গাঙ্গুলীর আবেগময় সুর বাঙালির জাতীয় চেতনায় এই গানকে অমর করে রেখেছে।

আপনি যদি গানটি এবং এর ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে চান, তবে ATReads-এ যোগ দিন। এখানে আপনি গান, বই, এবং ইতিহাস নিয়ে রিভিউ লিখতে, নিবন্ধ প্রকাশ করতে এবং লেখকদের সম্প্রদায়ে যুক্ত হতে পারবেন। ATReads-এর অংশ হয়ে নিজের চিন্তাভাবনা শেয়ার করুন এবং নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করুন।

Like
Yay
4
Αναζήτηση
Προωθημένο
Κατηγορίες
Διαβάζω περισσότερα
Lifelong Learning
Education Beyond Borders: International Collaboration and Knowledge Sharing in Bangladesh
Education, often regarded as the cornerstone of progress, is transcending national boundaries in...
από Shopna Maya 2023-12-22 12:28:45 2 12χλμ.
Writing
সব শিক্ষা বইয়ের পাতা থেকে হয়না, কিছু শিক্ষা – পরিস্থিতি আর বাস্তবতা শিখিয়ে দেয়।
আমাদের সমাজে শিক্ষাকে সাধারণত পাঠ্যবই আর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ মনে করা হয়।...
από Razib Paul 2025-03-06 05:53:02 0 7χλμ.
Writing
বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না
"বই পড়া মানে অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন। বই মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সঙ্গী এবং...
από Razib Paul 2024-11-26 13:51:41 0 4χλμ.
Sports
Diamond Exchange ID: Designed for Champions
  In the world of online gaming and betting, the pursuit of excellence separates the casual...
από Jockey Dosanjh 2024-12-24 05:37:39 0 6χλμ.
AT Reads https://atreads.com