সমালোচনা কারীদের জবাব

0
9KB

সমালোচনা—এটি যেমন একজন মানুষকে ভেঙে দিতে পারে, তেমনি গড়েও তুলতে পারে। পার্থক্যটা শুধু এই যে, আপনি সেটাকে কীভাবে গ্রহণ করছেন। কিন্তু আজ আমি শুধু গ্রহণের কথা বলবো না, কিছু প্রশ্নও রেখে যেতে চাই—সমালোচনার নামে আপনি যে তীর ছুঁড়লেন, তার গন্তব্য আপনি নিজে জানেন তো?

আমার জীবন, আমার পথচলা, আমার সিদ্ধান্ত—সবই আমার অভিজ্ঞতার আলোকে গড়ে উঠেছে। হ্যাঁ, ভুল করেছি, হবেই তো! ভুল না করলে মানুষ শিখে কীভাবে? তবুও লক্ষ্য করি, অনেকেই ভুল খোঁজার মাঝে যে উৎসাহ দেখায়, সহানুভূতির জায়গাটায় তারা যেন অনুপস্থিত।

সমালোচকদের অভাব হয় না। আপনি যদি কিছু করতে যান, দশজনের কথা শুনতেই হবে—“এটা ঠিক হচ্ছে না”, “ওর দ্বারা হবে না”, “নিজেকে খুব কিছু ভাবছে!” কখনো কখনো মন খারাপ হয়, কিন্তু প্রশ্ন জাগে—তারা কি সত্যিই আমার পথচলার দায় নিচ্ছে? না, নেয় না। তবু কেন এত অধিকার নিয়ে কথা বলে?

ধরুন, একজন তরুণ ছেলেকে দেখি—সে গ্রামের একটা ছোট্ট দোকানে বসে অনলাইনে কিছু শিখছে। ভিডিও দেখে, কোড শেখে, ইংরেজি শেখে, ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে। পাড়ার মানুষ হাসে—“ওই মোবাইল নিয়ে বসে থাকলে কিছু হবে না”, “ভবিষ্যতের চাকরি কি ইউটিউব থেকে আসবে?” কিন্তু কয়েক বছর পর দেখা যায়, সেই ছেলেটিই ফ্রিল্যান্সিং করে পরিবারের হাল ধরেছে। তখন আবার সবাই বলে—“আমরা তো শুরু থেকেই জানতাম, ছেলেটা একদিন কিছু করবেই!”

এটাই সমাজের চরিত্র—যখন আপনি লড়ছেন, তখন ব্যঙ্গ চলে; যখন আপনি সফল হন, তখন সবাই পাশে দাঁড়ায়। অথচ মাঝের সময়টুকুতে কেউ হাতে ধরে না।

আমার কথা বলি—আমি জানি, আমার পথে বাধা আসবে। ভুল হবে, পিছিয়ে যাব। কিন্তু চেষ্টা থামাব না। যারা সমালোচনা করছেন, আমি শুধু বলবো—আপনারা পাশে না দাঁড়ালেও ক্ষতি নেই, অন্তত টেনে নামানোর চেষ্টা করবেন না।

যদি সত্যিই ভালো চান, তবে গঠনমূলক পরামর্শ দিন। আর যদি শুধু কষ্ট দেওয়ার উদ্দেশ্যে কিছু বলেন, তাহলে জেনে রাখুন—আপনার সেই শব্দগুলো আমাকে থামাতে পারবে না। বরং আমাকে আরও সচেতন করে তুলবে, আরও শক্তি দেবে।

কারণ আমি জানি—আমি যা করছি, তা সময়ের সঙ্গে ফল দেবে। আর সেই সময়ই আপনাদের প্রশ্নের উত্তর হবে।

সমালোচনা যদি গঠনমূলক হয়, আমি কৃতজ্ঞ। কিন্তু যদি তা হয় ছোট করার জন্য, তুচ্ছতাচ্ছিল্য দেখানোর জন্য, তাহলে বলবো—“আপনার শব্দে আমি থামবো না। আমি জানি আমি কোথায় যাচ্ছি। আপনার চোখে হয়তো আজ আমি অস্পষ্ট, কিন্তু সময়ই আমার পরিচয় হয়ে উঠবে।”

আমরা যারা কিছু করতে চাই, তারা সমালোচনা পাবোই। যিনি কিছু করছেন না, তিনিই সমালোচনার বাইরে থাকেন। আপনি যদি বীজ বপন করেন, কেউ বলবে—“এই মাটি তো শুকনো”, কেউ বলবে—“এটা সময় নয়”, কেউ আবার বলবে—“তুমি তো চাষি নও।” কিন্তু একদিন সেই বীজ যদি অঙ্কুরিত হয়, তখন সকল সমালোচকের কণ্ঠে একটাই বাক্য থাকে—“আমি তো বলেছিলাম, তুমি পারবে!”

তাই বলি, সমালোচনার ভয় করবেন না। বরং সেটাকে কাজে লাগান। আপনি জানেন আপনি কে, কেন করছেন, কাদের জন্য করছেন। বাকিরা বলুক—সময়ই জবাব দেবে।

Suche
Gesponsert
Kategorien
Mehr lesen
Writing
ATReads: Nurturing Literary Bonds in the Heart of Bangladesh
In the bustling digital landscape, where connections are forged through shared interests and...
Von AT Reads.com 2023-12-16 12:05:57 1 18KB
Reading List
Bookstore Gems: Must-Visit Bookshops in Bangladesh
Bangladesh, a land steeped in history and culture, has a rich literary heritage that has produced...
Von Bookworm Bangladesh 2023-12-20 13:51:24 0 13KB
Writing
100+ Character Ideas
Creating compelling characters is the heart of storytelling. Whether you're writing a novel,...
Von Books of the Month 2025-02-18 06:31:35 4 7KB
Andere
৭১ এর চেতনা
১৯৭১ সালে, বাংলাদেশ স্বাধীনতার জন্ম নিয়ে একটি অমূল্য চেতনা উত্তীর্ণ হয়। এই প্রকাণ্ড বীরশ্রেষ্ঠ...
Von Khalishkhali 2023-12-04 07:03:31 0 14KB
Literature
ADORATION IN THE EYES OF THE BEHOLDER
Eros:  Eros is the Greek god of love. It represents romantic or passionate love. This one...
Von Pallavi Ghosh 2024-04-05 14:12:54 8 10KB
AT Reads https://atreads.com